কেদারনাথ বেড়াতে গিয়ে ধসের কারণে সেখানেই আটকে পড়েছেন চুঁচুড়ার ৩ জন পর্যটক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও তৈরি করে সেখান থেকেই তারা সাহায্যের আর্তি জানিয়েছেন। তবে শুধুমাত্র হুগলি নয়, হাওড়া থেকেও পূজায় উত্তরাখণ্ডে বেড়াতে গিয়ে অনেকে আটকে পড়েছেন। জানা যাচ্ছে, উত্তরাখণ্ডে ধসে আটকে পড়েছেন ১৪ জন বাঙালি পর্যটক। গত ১৫ অক্টোবর পূর্বা এক্সপ্রেসে করে হাওড়া থেকে কেদারনাথ রওনা দিয়েছিলেন হুগলী-চুঁচুড়া পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বুড়োশিবতলার বাসিন্দা চুমকি রায়, তার স্বামী বিশ্বজিৎ রায় এবং তাদের মেয়ে অন্বেষা রায়। কেদারনাথে পৌঁছেছিলেন ১৭ অক্টোবর। তাদের সাথে ছিলেন তাদের দুজন পারিবারিক বন্ধু অরিজিৎ শীল এবং সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়।
কিন্তু তারা কেদারনাথে পৌঁছানোর পর থেকেই আবহাওয়া অত্যন্ত খারাপ হতে শুরু করে। শুরু হয়ে যায় ব্যাপক বৃষ্টি এবং ঝড়। পরিস্থিতি খারাপ দেখে অরিজিৎ এবং সত্যব্রত গৌরীকুণ্ডে নেমে যান সম্পূর্ণ ঝুঁকি নিয়ে। কিন্তু, চুমকি এবং তার পরিবার সেখানে নামতে পারেননি। এরপর কেদারনাথে ধ্বস নামে।তারপর সেখানে তারা আটকে পড়েন। সেখান থেকে একটি ভিডিও তৈরি করে তারা জানিয়েছেন, তারা দুদিন ধরে পর্যাপ্ত জল এবং খাবার পাচ্ছেন না। তারা ভীষণ সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। স্থানীয়ভাবে কোন সরকারি সাহায্য করা হচ্ছে না। কেদারনাথে ভারী বর্ষণের কারণে অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। উদ্ধারকাজ বাধা পাচ্ছে।
এছাড়াও জানা যাচ্ছে কেদারনাথে যে হেলিকপ্টার পরিষেবা ছিল তা এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে। ওই ভিডিওবার্তায় তিনি আরও জানিয়েছেন, 'কেদারনাথে সম্পূর্ণ লাল সর্তকতা জারি হয়ে গেছে।কপ্টার পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ। কি করে নামতে পারব বুঝতে পারছিনা। সরকারি কোন সাহায্য পাচ্ছি না। আমফানের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গৌরীকুণ্ডে নেমে গিয়েছেন। কিন্তু সকলে আমরা নামতে পারিনি। এখান থেকে হেঁটে নামা সম্ভব নয়। "
চুমকির পারিবারিক বন্ধু দেবাশীষ কুন্ডু বলছেন, "ওরা যতক্ষণ না পর্যন্ত নিচে নেমে আসছে ততক্ষণ আমাদের উৎকণ্ঠা বেড়ে চলেছে।যেদিন গেল সেদিন ফোনে কথা হয়ছিল। ওরা বেশ আনন্দ করে কেদারনাথে পৌঁছেছিল। কিন্তু তার পরেই হঠাৎ করে আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে। কেদারনাথ মন্দির এর কাছে একটি কটেজ ভাড়া করে ওরা রয়েছে। ওদের অনেক ভাড়া গুনতে হচ্ছে। ধীরে ধীরে ওদের টাকা-পয়সা শেষ হয়ে যাচ্ছে।" জানা যাচ্ছে, কেদারনাথ, বদ্রিনাথ, গুপ্তকাশী এবং লখনৌ হয়ে ২৪ অক্টোবর বাড়ি ফেরার কথা ছিল চুমকি এবং তার পরিবারের। কিন্তু, খারাপ থাকার কারণে তারা রীতিমতো আটকে পড়েছেন কেদারনাথে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আত্মীয় পরিজনদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।