হিজাব বিতর্ক নিয়ে কর্ণাটক ইতিমধ্যেই উত্তেজিত হয়ে পড়েছে। সেই উত্তেজনা থামাতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সিদ্ধান্ত নিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই (Basava Raj Bommai)। ইতিমধ্যেই কর্ণাটক হাইকোর্টে বিষয়টি নিয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার সেই মামলা নিয়ে প্রথম শুনানিও হয়ে গেল। আদালতে শুনানি শুরুর ঠিক আগে মুখ্যমন্ত্রী টুইট করে ঘোষণা করলেন, আগামী তিন দিনের জন্য কর্নাটকের সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে।
স্কুল এবং কলেজের পড়ুয়াদের শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী। শুনানির সময় বিচারপতি পড়ুয়া এবং সাধারণ মানুষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় এর অনুরোধ জানালেন। বিচারপতি দীক্ষিত কৃষ্ণ শ্রীপাদ বললেন, "জনসাধারণের জ্ঞান এবং নীতিবোধের প্রতি আদালতের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এগুলি নিয়ে তারা ভবিষ্যতে ভাববেন।" বর্তমানে পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন রয়েছে কর্ণাটক সরকার। এই বিষয়টির সমাধান করার জন্য সরকার একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করেছে। কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্র বলছেন, স্কুল-কলেজ হিজাব বা গেরুয়া উত্তরীয় কোনটাই কিন্তু পরা উচিত কাজ নয়। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই বিষয়টি নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মাসখানেক আগে উদুপির গভর্নমেন্ট গার্লস পিইউ কলেজ থেকে এই হিজাব নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। সেখানে ছয় ছাত্রীকে মাথায় হিজাব পড়ে আসার জন্য ক্লাসে ঢুকতে দেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকে প্রতিবাদের আগুন অন্যান্য কলেজে ছড়িয়ে পড়ে। বেঙ্গালুরুর একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরে কলেজে প্রবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। গেরুয়া উত্তরীয় পরে একদল পড়ুয়া কলেজে প্রবেশের চেষ্টা করে। সেখানে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এখনো পর্যন্ত সারা কর্নাটকে এই ঘটনার রেশ চলছে। তার মধ্যেই, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের তিন দিনের জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।