গতকাল থেকে গোটা বিশ্বের খবরের শিরোনামে আফগানিস্তানের (Afganistan) তালিবানি (Taliban) শাসন। মাত্র কিছু ঘণ্টার মধ্যে একটি গোটা দেশ দখল করে নিয়েছে তালিবানি যোদ্ধারা। আফগানিস্তানের রাস্তায়, পার্কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বন্দুকধারীরা। তালিবানের তান্ডব থেকে প্রাণ বাঁচাতে যে কোনও মূল্যে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন সেখানকার বাসিন্দারা। সোশ্যাল মিডিয়াতে মুহুর্মুহু ভাইরাল হচ্ছে দেশের মানুষের করুণ পরিস্থিতি। আতঙ্ক ছড়াচ্ছে অন্য দেশেও। এমনকি তালিবানি শাসনের প্রভাব পড়তে পারে ভারতের। এবার কাবুলের নীতিনির্ধারণে বড় ভূমিকা নেবে পাকিস্তান। ভারতের জন্য কাশ্মীরে বিপদ বাড়িয়ে তুলবে হাক্কানী নেটওয়ার্ক, লস্কর ও জইশের মত জঙ্গী সংগঠনগুলি। এই পরিস্থিতিতে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (Dr. S Jaishankar) কথা বললেন মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার টুইট করে এই কথা জানান জয়শঙ্কর।
জয়শঙ্কর টুইট করে লিখেছেন, "আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কাবুল বিমানবন্দরে দ্রুত পরিষেবা পুনর্বহাল করার বিষয়ে কথা হচ্ছে। এই বিষয়ে আমেরিকার সহযোগিতা প্রশংসনীয়।" তবে বর্তমানে তালিবানের কাবুল দখলের পর থেকে আফগানিস্থানে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাতে ভারতীয় দূতাবাস কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জরুরী পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদূতসহ ওই দূতাবাসে কর্মরত সমস্ত ভারতীয়কে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। ওখানে কাজ করবেন শুধুমাত্র আফগান কর্মীরা। সেই প্রেক্ষিতে কাবুল থেকে ১২০ জন ভারতীয় কর্মীকে নিয়ে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় বায়ুসেনার C17 বিমান। যদিওবা তালিবান আশ্বাস দিয়েছে বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন বিচার করে বড়সড় পদক্ষেপ নিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট সংস্থা ফেসবুক। ফেসবুকের তরফে জানানো হয়েছে, "মার্কিন আইন অনুযায়ী তালিবান জঙ্গী সংগঠন। সেই কারণে ফেসবুক থেকে ওই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। যে সমস্ত প্রোফাইল থেকে তালিবানদের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়, সেসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হবে। এমনকি যারা ফেসবুকে তালিবানদের সমর্থনে পোস্ট করছেন তা মুছে ফেলা হবে। মুছে ফেলার পর নতুন পোস্ট করা হলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।" ইতিমধ্যেই ফেসবুক এই কাজের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল তৈরি করেছে। ওই দলের সকলেই আফগানিস্তানের স্থানীয় ভাষায় পারদর্শী এবং সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। এই বিশেষজ্ঞ দল পোস্ট মুছে ফেলা এবং প্রোফাইল বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। ফেসবুকের এমন সিদ্ধান্ত তালিবানিদের প্রচারে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।