ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থা একসাথে মিলে ফাঁস করল পাকিস্তানের অর্থসাহায্যে পরিচালিত একটি সন্ত্রাসী মডিউলের সম্পূর্ণ প্ল্যানিং। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তদন্তকারী সংস্থাগুলি গ্রেফতার করেছে ৬ জনকে। সূত্রের খবর, ধৃতরা ভারতে সন্ত্রাসী মডিউলের পরিচালনা করছিল। তাদের টার্গেট ছিল, দিল্লিতে অন্যান্য বড় শহরে বড় জঙ্গী নাশকতাকে রূপ দেওয়া। তথ্য অনুযায়ী, এরা পাকিস্তানি সন্ত্রাসী মডিউলের জন্য কাজ করতো এবং এদের মধ্যে দুজন আবার পাকিস্তানে গিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিল। বর্তমানে, এই ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এদের পর্দা ফাঁস করার জন্য উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লিতে অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে এই তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এজেন্সিগুলি দাবি করছে, সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র এবং বিস্ফোরক উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
জানা গিয়েছে, পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী মডিউলের জন্য ৬ জন সদস্য কাজ করতো। এদের নির্দেশ দিত দুইজন অন্য পাকিস্তানি। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মূলত নবরাত্রি এবং অন্যান্য উৎসবে দিল্লি এবং অন্যান্য জায়গায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো। তদন্তকারী সংস্থাগুলি তাদের কাছ থেকে আইইডি উদ্ধার করেছে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা যাচ্ছে, ধৃতদের বয়স মোটামুটি ২২ থেকে ৪৩ বছরের মধ্যে। জানা যাচ্ছে, এই জঙ্গিরা সারাদেশে বিস্ফোরণের জন্য এখানে এসেছিল। সম্ভবত, দিল্লি এবং অন্যান্য বড় শহরে জঙ্গী নাশকতা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল এই জঙ্গিগোষ্ঠী। তাদের মূল টার্গেট ছিল নবরাত্রি এবং অন্যান্য বড় উৎসব।
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের স্পেশাল সিপি নীরজ ঠাকুর জানিয়েছেন, 'এই সন্ত্রাসী মডিউলের সংযোগ রয়েছে ডি কোম্পানির সঙ্গে। পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে এই সংস্থাগুলি বড় জঙ্গি নাশকতা করার পরিকল্পনা করছিল। গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিদের মধ্যে ২ জন আবার পাকিস্তান থেকে স্পেশাল ট্রেনিং নিয়ে ভারতে এসেছে। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল তাদের পাকড়াও করার জন্য বহু রাজ্যে হানা দিয়েছিল। এই সন্ত্রাসী মডিউল সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছিল। অনুসন্ধান করে জানা গিয়েছিল, তাদের নেটওয়ার্ক ইতিমধ্যেই অনেক জায়গায় ছড়িয়ে গিয়েছে। এই কারণে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের অনুসন্ধান চালাতে হয়। মহারাষ্ট্রের একজন সন্ত্রাসবাদীকে গ্রেফতার করা হয়েছে কোটা থেকে। উত্তরপ্রদেশ এটিএসের সহায়তায় দুজন সন্দেহভাজনকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।'
নীরজ ঠাকুর আরো জানিয়েছেন, 'ধৃতদের মধ্যে দুজনকে মাস্কটে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে তাদের পাকিস্তানে প্রশিক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযুক্তরা জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে ১৪ জন বাংলায় কথা বলতো। তাদেরকে একটি ফার্ম হাউসে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। একটি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আনিস ইব্রাহিম, যাদের কাজ ছিল মূলত অর্থ জোগাড় করা। অন্য দল ভারতের বিভিন্ন বড় উৎসবে সারাদেশে বিস্ফোরণের জন্য বড় শহরগুলিকে চিহ্নিত করত। গোপন সূত্র থেকে খবর এসেছিল, ভারতের বড় মাপের জঙ্গী নাশকতা হতে চলেছে। যে দুজনকে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাদেরকে ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পাকিস্তানের ব্যাপারে অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাথে এই সমস্ত তথ্য ভাগ করে নেওয়া হবে। পুজোর মরশুমে মূলত জায়গায় জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য ছক তৈরি করছিল এই জঙ্গি গোষ্ঠী। তাদের মূল ষড়যন্ত্র ছিল রামলীলা এবং নবরাত্রিতে বিস্ফোরণ করা।'