দেশের করোনা পরিস্থিতি লাগামছাড়া। গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা সমস্ত রেকর্ড ছাড়িয়ে ৪ লক্ষ অতিক্রম করেছে। অক্সিজেন সংকট, ওষুধ ঘাটতিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশ। এমন অবস্থায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ইতিমধ্যে আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী সহ বিভিন্ন দেশ সাহায্য করতে শুরু করেছে। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে চিন ও পাকিস্তান সাহায্যের ঘোষণা করেছে। এখানে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে ১৬ বছর আগে তৈরি হওয়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের জমানায় বিশেষ নীতির কি বদল হতে চলেছে?
কী সেই নীতি? ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে তৈরি হওয়া বিশেষ নীতিতে মনমোহন সরকার জানিয়েছিল দরিদ্র দেশের তকমা ঘোচাতে যাতে দেশে জরুরিকালীন অবস্থাও বাইরের দেশ থেকে কোন সাহায্য গ্রহণ করবে না। পরিস্থিতি মোকাবিলায় 'আত্মনির্ভর' হয়ে উঠেছে দেশ। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে সুনামির ধাক্কায় দেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। ভারতসহ ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, মায়ানমারের মত দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। একদিনে প্রায় ১২ হাজারের বেশি প্রাণ অকালে ঝরে যায়। প্রায় ৬ লক্ষের বেশি মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েছিল। দেশের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন মনমোহন সরকার ঘোষণা করেছিল দেশ স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। যদি প্রয়োজন হয় দেশ সাহায্য নেবে, নাহলে একা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। দরিদ্র দেশের তকমা ঘোচাতে এই ঘোষণা বিশ্বের কাছে এক বিশেষ বার্তা বয়ে এনেছিল।
এমন অবস্থায় নরেন্দ্র মোদীর জমানায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। ইতিমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি চিনও সাহায্যের ঘোষণা করেছে। সমস্ত বৈরিতা ভুলে ২৫ হাজার অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিন। পাকিস্তানও সাহায্য করতে চায়। পাকিস্তানের সাহায্য নিয়ে দিল্লির তরফের সবুজ সংকেত না মিললেও চিনের সাহায্য গ্রহণ করতে প্রস্তুত মোদী সরকার। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে ১৬ বছর আগে তৈরি হওয়া নীতির কি বদল করল মোদী সরকার? মোদী সরকার না মানলেও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক একাংশ এমন দাবি তুলেছেন।