ভয়াবহ চেহারা নিচ্ছে আসামের বন্যা পরিস্থিতি। পরপর বেশ কয়েকটি জেলা প্লাবিত হওয়ায় রাতারাতি বানভাসি অবস্থা রাজ্যজুড়ে। আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (এএসডিএমএ) সর্বশেষ আপডেট অনুসারে, গত ছয় দিন ধরে লাগাতার বর্ষনের জেরে বন্যা এবং ভূমিধস প্রত্যক্ষ করছে রাজ্যটি। গত ২৪ ঘন্টায় ৩২ টি জেলার মোট ৪,২৯১ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর জেরে প্রভাবিত হয়েছে প্রায় ৩১ লাখ লোক। ইতিমধ্যেই ১.৫৬ লাখ লোককে রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ৫১৪ টি ত্রানশিবিরে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা আশ্রয় নেননি তাদের ত্রাণ বন্টন করা হয়েছে। সাময়িকভাবে ৩০২ টি নতুন ত্রাণকেন্দ্র খোলা হয়েছে।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স জেলা প্রশাসনকে বন্যা কবলিত এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ফায়ার অ্যান্ড ইমার্জেন্সি সার্ভিসের কর্মীরা, পুলিশ সদস্য এবং এএসডিএমএ স্বেচ্ছাসেবকদেরও উদ্ধার অভিযানের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে। সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্থা ২০,৯৮৭ জনকে সরিয়ে নিয়েছে। প্রসঙ্গত, শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টির জেরে গুয়াহাটি শহরের কোনো কোনো এলাকায় বুক সমান জল জমে গিয়েছে।
গুয়াহাটি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কমিশনার দেবাশীষ শর্মার নির্দেশে ভারালু নদীর স্লুইস গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "আসামে ভারী বর্ষণ এবং ব্রহ্মপুত্র দিয়ে অতিরিক্ত জল প্রবাহের কারণে, গুয়াহাটিতে নদীর জলের স্তর যথেষ্ট বেড়েছে। এর ফলে শহরের নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে, আমরা ভারালুতে বন্যার জল পাম্প করলেও কিন্তু আজ আমরা তা করতে পারছি না।" ইতিমধ্যেই চিড়িয়াখানা রোড, আরজি বড়ুয়া রোড, নবীন নগর, অনিল নগর, হাতিগাঁও, লাচিত নগর, তরুণ নগর, জ্যোতিকুচি, ঘোড়ামারা, ভিআইপি রোড, চাঁদমারি এবং আরও অনেক এলাকা থেকে বন্যার খবর আসতে শুরু করেছে। অন্যদিকে কাছাড়, ডিমা হাসাও, গোয়ালপাড়া, হাইলাকান্দি, কামরুপ মেট্রোপলিটন, করিমগঞ্জ এবং দক্ষিণ সালমারা জেলা থেকে নতুন করে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে। করিমগঞ্জের বিপি ঘাটে বরাক নদী, কাছাড়ের এপি ঘাট ও হাইলাকান্দির মাটিজুরি এবং করিমগঞ্জ শহরের কুশিয়ারা উপনদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।