ইজরাইলি স্পাইওয়্যার পেগাসাসের (Pegasus Spyware) প্রয়োগ নিয়ে কিছুদিন আগেই উত্তাল হয়েছিল গোটা জাতীয় রাজনীতি। কেন্দ্রের (Central Government) মোদি সরকার পেগাসাসের মাধ্যমে সম্ভাব্য নজরদারি চালাচ্ছে এই অভিযোগের তদন্ত চেয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দোরগোড়ায় পৌঁছালেন এডিটর্স গিল্ড (Editor's Guild) ও প্রবীণ সাংবাদিক মৃণাল পান্ডে। আবেদনকারীরা বিদেশী সংস্থার সাথে কেন্দ্রীয় চুক্তি সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়েছে ও স্পাইওয়্যার প্রয়োগে আইনি ধারায় কেন্দ্রের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
সুপ্রিমকোর্টে পেশ করা আবেদনে গিল্ড ও মৃণালের তরফে জানানো হয়েছে, "সংবাদমাধ্যমের কাজকর্মের সরকার বা তাদের কোনো সংস্থা হস্তক্ষেপ করবে না, এই ধারণা নিয়ে সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা উপভোগ করে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন হয়। যাঁরা তথ্য সরবরাহ করেন তাঁদের সাথে গোপনে ও নিরাপদে কথা বলা, ক্ষমতা ও দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করা, সরকারের অদক্ষতা নিয়ে সমালোচনা করা ও তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার অঙ্গ। কিন্তু প্রশাসন তাদের সাংবিধানিক অধিকার লংঘন করে স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে নজরদারি চালিয়েছে। প্রশাসন কি ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানার অধিকার ভারতীয় নাগরিকদের আছে। কিন্তু সংসদীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সে কথা জানার সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে বারংবার অস্পষ্ট জবাবের মাধ্যমে বিতর্ক থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।" তাই দেশবাসী তথ্য জানার অধিকারকে পুনরুদ্ধার করতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আবেদনকারীরা।
সুপ্রিম কোর্টে এডিটর্স গিল্ড ও মৃণাল পান্ডে একাধিক অভিযোগ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। সেগুলি হল:
১) ভারতীয় নাগরিকদের ফোনে নজরদারি করার যে নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র তা পেশ করা হোক এবং কি নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা লিখিতভাবে জানানো হোক।
২) ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাসের মাধ্যমে যে নজরদারি ও হ্যাকিং চালানো হয়েছিল তার বিস্তারিত বিবরণ দিক কেন্দ্র। ইজরায়েলি সংস্থা "এনএসও" থেকে কেন্দ্র সরকার কোন স্পাইওয়্যার কিনেছে নাকি বা কিনলে সেই টাকা কোথা থেকে এসেছে তার তথ্য জানানো হোক।
৩) পেগাসাসের মত স্পাইওয়্যার কেনা এবং তার মাধ্যমে হ্যাকিং হোক সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে। এই বিষয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হোক।
৪) সাংবাদিকদের নজরদারি থেকে রক্ষা করতে নতুন বিধি তৈরি করা হোক। মহিলা সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখ হোক।
৫) ভারতীয় টেলিগ্রাফ আইন, ভারতীয় টেলিগ্রাফ বিধি ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনে নজরদারি সংক্রান্ত ধারাকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।