স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং আত্মনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে আরো এক কদম এগোলো ভারত সরকার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিদেশি আমদানির ওপর ভরসা না করে এবার বেশি পদ্ধতিতে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করতে চাইছে ভারত। ডিসেম্বর মাসে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে প্রতিরক্ষা সচিব অজয় কুমারের নেতৃত্বে একটি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি তৈরি করা হবে। ওই দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি এই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে মনে করেছে, বর্তমানে বিদেশি আমদানিতে কাটছাঁট করে ভারতকে আরো আত্মনির্ভর করে তোলা যেতে পারে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে। তবে শুধুমাত্র আত্মনির্ভরতা নয়, বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরীর ক্ষেত্রে অংশীদার হয়ে ওঠার লক্ষ্য নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
যদিও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বাধীন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। অন্য একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতকে অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঠিক এই কারণেই বিদেশ থেকে অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি কম করে ভারতীয় পদ্ধতিতে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরিতে মনোনিবেশ করেছে ভারত সরকার। গতবছর প্রথম ধাপে ১০১টি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ভারত সরকার। সম্ভাবনা রয়েছে, এবারে এই আমদানির কাটছাঁটের তালিকা আরও দীর্ঘ হতে চলেছে।
সরকারি সূত্র বলছে, ২০১৪ সালে ভারত থেকে ২,০০০ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সামগ্রী রপ্তানি হয়েছিল অন্য দেশে। ২০১৯ সালে এই অংক গিয়ে পৌঁছে ছিল ১৭,০০০ কোটি টাকায়। আগামী পাঁচ বছরে ভারত লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, ৩৫,০০০ কোটি টাকার অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানি করতে চাইছে অন্য দেশে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলছেন, যে ধরনের পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর কথা ভাবা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে সেগুলির আমদানির পিছনে ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করেছে ভারত সরকার। তাই যাতে যতটা সম্ভব কম বিদেশি মুদ্রা খরচ করা যায়, এবং ভারতকে রপ্তানির দিক থেকে আরও সক্রিয় করা যায়, সেই লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে ভারত সরকার।