চাকরি পেতে হলে পুরুষদের ঘুষ দিতে হয় আর মহিলাদের বিজেপি নেতাদের বিছানায় যেতে হয়, কর্ণাটকের বাসবরাজ বোম্মাই শাসিত বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলল বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের পুত্র প্রিয়াঙ্ক খাড়গে। শুক্রবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে মল্লিকার্জুন খার্গের ছেলে প্রিয়াঙ্ককে বলতে শোনা যায়, "এই সরকারে টাকা না দিলে চাকরি পাবেন না। বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকারে (রাজ্যের) চাকরি পেতে হলে তরুণীদের সোফায় বসতে হয় এবং যুবকদের ঘুষ দিতে হয়। এটা কাউচ সরকারে পরিণত হয়েছে।"
তিনি বলেন, "ঘুষ আর বিছানার সরকার হয়ে উঠেছে বিজেপি। সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই সরকারের দুই মন্ত্রী এই অভিযোগে পদত্যাগ করেছেন।" তাঁর সংযোজন, "সরকার পদ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একজন তরুণী চাকরি চাইলে একজন মন্ত্রী তার সঙ্গে শোয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে তিনি পদত্যাগ করেছেন।" উল্লেখ্য, বিজেপি নেতা রমেশ জারকিহোলি যৌন নির্যাতনকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে শেষমেষ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। অন্যদিকে বিজেপি বিধায়ক কে এস ঈশ্বরপ্পও একই অভিযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
খার্গে বলেন, "আমার কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, সম্ভবত মোট ৬০০টি পদের জন্য চুক্তি করা হয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে যে তারা সহকারী প্রকৌশলী পদের জন্য ৫০ লাখ টাকা এবং জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের পদের জন্য ৩০লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়েছে। শুধুমাত্র এতেই ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।" তিনি জানান, "প্রতিটি নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম হলে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা যাবে কোথায়? দুষ্কৃতিকারী ও মধ্যস্বত্বভোগীরা জানে যে কোনো কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে এলেও তাদের কিছুই হবে না। কেপিটিসিএল পদপ্রার্থী প্রায় ৩ লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে সরকার।"
এদিকে প্রিয়াঙ্কের মন্তব্যকে সমর্থন করতে পারছেন না বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। তিনি বলেন, "তিনি যা বলেছেন তা নিন্দনীয়। এটি মহিলাদের বিরুদ্ধে অপমানজনক। মল্লিকার্জুন খার্গের ছেলে মহিলাদের বিরুদ্ধে একেবারে আতঙ্কজনক বিবৃতি দিয়েছেন।" তাঁর সংযোজন, "জাতীয় মহিলা কমিশনের তাকে প্রশ্ন করা উচিত। তাকে সোনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে দিয়েই তিরস্কার করানো উচিত।" অন্যদিকে ট্যুইটারে বিজেপি কর্নাটক লিখেছে, "হাজার হাজার মহিলা, মেধাবী, শিক্ষিত, কঠোর পরিশ্রম করে, অনেক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় এবং চাকরি পায়। প্রিয়াঙ্কা খাড়গে, আপনার এই কথাগুলির কারণে, এত মহিলা কি অপমানিত হলে না? অবিলম্বে ক্ষমা চান।"
ট্যুইটে আরও লেখা ছিল, "প্রাক্তন মন্ত্রী প্রিয়াঙ্ক খাড়গে এই ধরনের বক্তব্য করার আগে নিজের ঘর দেখতে পারতেন। কংগ্রেস সরকারের আমলেই জয়মালা ঘুষ কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে এসেছিল এবং আমরা সবাই জানি এতে কারা জড়িত ছিল।" লেখা হয়েছে, "কংগ্রেস নেতাদের রঙিন রাতের জীবনের গল্পগুলি নিছক শোনা কথা নয়। অনেক গোপন সিডিই পাওয়া গিয়েছে।"