আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে ভারতে শুরু করা হচ্ছে করোনা ভাইরাসের টিকা প্রদান। তার আগেই সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব জানিয়েছেন," ড্রাই রানের প্রতিক্রিয়ার উপরে ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় সরকার জরুরী ভিত্তিতে করোনাভাইরাস টিকা প্রদান শুরু করতে চলেছে আগামী ১০ দিনের মধ্যে।" সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এবং ভারত বায়োটেককে এই করোনাভাইরাস টিকা প্রস্তুতির দায়িত্ব দিয়েছেন ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া ভি জে সোমানি। জানিয়ে রাখি, গত ২৮ এবং ২৯ ডিসেম্বর চার রাজ্যে করোনা টিকার ড্রাইরান করা হয়েছিল।
দেশের চারটি জায়গায় প্রধান প্রাথমিক টিকা কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। এই জায়গাগুলি হল কারনাল, মুম্বাই, চেন্নাই এবং কলকাতার জিএমএসডি। সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সর্বমোট ৩৭টি কেন্দ্রে টিকা পাঠানো হবে। টিকা সব জায়গায় পৌঁছে গেলে সেখানে টিকা রাখা হবে এবং বন্টন করা হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার উপর নজর রাখা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
তবে এই বিশাল কর্মকাণ্ড খুব সুষ্ঠুভাবে পালন করা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবার, স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিকভাবে করোনা যোদ্ধা, কো মর্বিড এবং পঞ্চাশোর্ধ নাগরিকদের টিকা করন করা হবে। তারপরে দেশের অন্যান্য নাগরিককে টিকা দেওয়া। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে নিয়ে আসা হয়েছে একটি বিশেষ অ্যাপ্লিকেশন যার নাম Co-Win। এই অ্যাপ্লিকেশন কেন্দ্রীয় সরকারকে যাবতীয় গতিবিধি র উপরে নজর রাখতে সহায়তা করবে।
কাজ করার পদ্ধতি নিয়ে বেশ কিছু তথ্য জানানো হয়েছে। আপাতত গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপ্লিকেশন নেই। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রক তরফে জানানো হয়েছে, Co-Win অ্যাপ্লিকেশন এর মাধ্যমে এসএমএস আধার এবং ডিজি লকার এর মত কিছু ব্যবস্থা করে গোটা টিকা করন প্রক্রিয়া কার্যকর করা হবে। এছাড়াও দুর্নীতি ঠেকাতে আধার কার্ডের ব্যবহার করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। সরকার প্রত্যেক টিকা গ্রহণকারী ব্যক্তিকে একটি ইউনিক আইডেন্টিটি নম্বর দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। টিকা গ্রহণের পরে ওই ব্যক্তির দেহে কোন বিরুপ পরিবর্তন আসছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে।
যখন এই অ্যাপ্লিকেশন চালু হবে তখন প্রথমে টিকাকরণের জড়িত স্বাস্থ্যকর্মী এবং যিনি টিকা নিতে ইচ্ছুক তাদের দুজনের মোবাইল ফোনে ১২ টি ভাষাতে এসএমএস পৌঁছে যাবে। ওই মেসেজে টিকাকরণের প্রতিটি ধাপ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হবে। এই Co-Win অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে টিকাকরণ এর পরবর্তী শংসাপত্র পাঠানো হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের ক্লাউড স্টোরেজ অ্যাপ্লিকেশন ডিজি লকার ব্যবহার করে আপনি ওই শংসাপত্র সেভ করে রাখতে পারেন। এছাড়াও সব সময় একটি হেল্পলাইন নম্বর খোলা থাকবে আপনার সহায়তার জন্য।
এই অ্যাপ্লিকেশন চালু হলে এই অ্যাপ্লিকেশনে চারটি মডিউল দেওয়া হবে:
- প্রথম মডিউল তৈরি হয়েছে যারা টিকা নেবেন এবং ব্যবহারকারীর সুবিধার জন্য
- দ্বিতীয় মডিউল টিকা নিতে ইচ্ছুকদের জন্য তৈরি
- তৃতীয় মডিউলে টিকাকরণ হওয়ার পর কি পরিবর্তন হয়েছে তা জানাতে পারবেন
- চতুর্থ মডিউল টিকাকরন প্রক্রিয়া কোন পর্যায়ে রয়েছে তা আপনাকে জানিয়ে দেবে
এছাড়া নাম নথিভুক্তিকরণ এর জন্য পাবেন তিনটি অপশন:
- প্রথম অপশনে নিজে থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন
- দ্বিতীয় অপশনে কোন আধিকারিক এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন
- তৃতীয় অপশনে একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তির রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব
তবে মনে করা হচ্ছে যারা করোনা শিবিরে থাকবেন তারাই সাধারণ মানুষকে এই অ্যাপ ব্যবহারে সাহায্য করবেন। পাশাপাশি যারা অ্যাপ ব্যবহারের স্বচ্ছন্দ নন, তাদের ক্ষেত্রে তাদের ভোটার কার্ডের তথ্য ব্যবহার করা হবে।