সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না রবিবার দাবী করলেন, ভারতীয় বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থায় মহিলাদের জন্য ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করতে হবে। তবে শুধু বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থাই নয়, দেশজুড়ে সমস্ত ল’কলেজেও এই সংরক্ষণ পদ্ধতি মেনে চলার পক্ষেও সওয়াল করলেন তিনি এদিন।
সুপ্রিম কোর্টের মহিলা উকিলদের উদ্দেশ্য করে তিনি এদিন বলেন, “এটি(বিচার ব্যবস্থা এবং ল’কলেজে সংরক্ষণ) আপনাদের অধিকার। আপনারা এর জন্য দাবী করতে পারেন”।
তিনি আরও বলেন, “ভারতীয় বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থায় মহিলাদের জন্য আমাদের চাই ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ। এটি হাজার বছর ধরে নিপীড়নের একটি নমুনা। বিচার বিভাগের নিম্ন কক্ষে মহিলা বিচারপতির সংখ্যা ৩০ শতাংশ। হাইকোর্টে সেই সংখ্যা ১১.৫ শতাংশ। সুপ্রিম করতে মহিলা বিচারপতি শতকরা মাত্র ১২ শতাংশ”।
তথ্য দিতে গিয়ে তিনি এদিন জানান, এদেশে ১৭ লক্ষ উকিল আছে। তার মধ্যে কেবলমাত্র ১৫ শতাংশই মহিলা। রাজ্য বার কাউন্সিলগুলিতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে মহিলাদের পরিমান শতকরা মাত্র ২ শতাংশ। তিনি বলেন, “আমি এবিষয়ে প্রশ্ন করেছি, ভারতের জাতীয় সমিতির বার কাউন্সিলে একজন মহিলা প্রতিনিধিও নেই কেন”? কথার মাঝে কার্ল মার্ক্সের উদ্ধৃতি টেনে এনে তিনি বলেন, “কার্ল মার্ক্স বলেছিলেন, ‘বিশ্বের সমস্ত শ্রমিকদের একত্র হতে’। আমি সেটাকে সংশোধন করে বলব, ‘বিশ্বের মহিলারা এক হোন’”।
কন্যা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁর সংযুক্তি, “আমি কেবলমাত্র সাংগঠনিক ত্রুটিগুলি সংশোধন করার চেষ্টা করছি… অবকাঠামো পরিবর্তন করার জন্য কার্যনির্বাহকদের জোর দিচ্ছি। সকলকে কন্যা দিবসের শুভেচ্ছা। এটি আমেরিকার ঐতিহ্য হলেও কিছু ভালো জিনিস থাকে, যা সারা বিশ্ব জুড়ে পালন করা যায়”।
তবে এটিই প্রথম নয়, এর আগেও একই বিষয়ে সরব হয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। এর আগে বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার আয়োজিত একটি অনুস্থানেও তিনি এই প্রসঙ্গ তুলেছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১ সেপ্টেম্বর একসাথে তিনজন মহিলা বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের জাজ হিসাবে ‘ঐতিহাসিক’ শপথগ্রহন করেন। এই নিয়ে বর্তমানে সর্বোচ্চ ন্যায়ালতে মহিলা বিচারপতির সংখ্যা চার জন। তবে সুপ্রিম কোর্টের মোট বিচারপতির সংখ্যার (৩৪) তুলনায় তা একেবারেই নগন্য।