এদিন ভারতের ৭২ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন ভারত সরকার ঘোষণা করে দিলো ২০২০ গালওয়ান উপত্যকা সংঘর্ষের প্রথম বিস্তারিত হিসাব-নিকাশ। চীনের সৈন্য এবং ভারতের সৈন্যের মধ্যে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ফলে ভারতকে হারাতে হয়েছিল তাদের ২০ জন সৈন্য কে এবং চীনের তরফে মারা গিয়েছিল তাদের অগুন্তি সৈন্য। ১৫ জুন লাদাখে ভারতীয় সেনা এবং চীনের সেনার মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়েছিল।
এই সংঘর্ষে সামনে থেকে লড়াই করার জন্য ১৬ বিহার ব্যাটালিয়নের শহীদ কমান্ডিং অফিসার কর্নেল সন্তোষ বাবুকে এদিন মরণোত্তর মহাবীর চক্র দিয়ে ভূষিত করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিরক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে একটি বক্তৃতা পেশ করা হয়। এছাড়া ঐদিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের তরফে প্রথমবারের জন্য গালওয়ান উপত্যকা সংঘর্ষের বিস্তারিত হিসাব সামনে আনা হলো।
এই বক্তৃতা তে বলা হয়েছিল, "কর্নেল সন্তোষবাবু অপারেশন স্নো লেপার্ড এর সময় গালওয়ান উপত্যকা এলাকায় নিয়োজিত ছিলেন। তার মূল কাজ ছিল শত্রুদের সামনে একটি অবজারভেশন পোস্ট তৈরি করা। কর্নেল সন্তোষবাবু তার গ্রুপের সঙ্গে কাজ করে এই পরিকল্পনা সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার পজিশন ধরে রাখার সময় বিপক্ষের থেকে তিনি অত্যন্ত বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন। বিপক্ষীয় সেনারা তার ট্রুপের উপরে অত্যন্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করেছিল।"
"চিনা সৈন্যের এই আক্রমণ থেকে রুখতে সক্ষম হয়নি। তার বীরত্বের মাধ্যমে এবং ভারতীয় সৈন্যদের শক্তির মাধ্যমে এই অফিসার চীনের সৈন্যের সমস্ত আক্রমণ একা রুখে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। অত্যন্ত গভীরভাবে আক্রান্ত হওয়ার পরেও কর্নেল বিকুমালা সন্তোষবাবু তার সমস্ত শক্তি দিয়ে চীনের সৈন্যকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এই সংঘাতের পরেও তিনি তার শেষ নিশ্বাস অবধি লাল সেনার বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন। তিনি তার সহ কর্মীদের জন্য একটি উদাহরণ রেখে গিয়েছেন।"
তার এবং তার ট্রুপের এই অবদানকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য তাদেরকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করল কেন্দ্রীয় সরকার। এরমধ্যে সন্তোষ বাবুকে দেওয়া হয়েছে মহাবীর চক্র এবং বাকি পাঁচজন পেয়েছেন বীর চক্র। জানিয়ে রাখি, ৪ জন মরণোত্তর এই পুরস্কার পেয়েছেন। মারাত্মক চোট পাওয়া সত্ত্বেও তিনি দেশের স্বার্থকে আগে রেখে সামনেথেকে লড়াই করেছিলেন। প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রেখে সন্তোষ বাবু এবং তার সেনা লড়াই করে চীনের সৈন্যকে পিছু হটতে বাধ্য করেছেন। তাই তাদের এই অবদানকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই ভারত সরকার তাদের ভূষিত করলো মরণোত্তর সম্মান দিয়ে।