দেশের নানা প্রান্ত থেকে যোগদান করা বিভিন্ন প্রগতিশীল মহিলাদের যোগ্যতাকে সন্মান জানাতে বেঙ্গালুরুতে বিশ্ব নারী দিবসে এক বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করবে ওয়েমপাওয়ার। আর সেই মঞ্চেই 'বিশ্বসেরা মা' এর খেতাব অর্জন করবেন একজন পুরুষ, ছোট্ট অবনীশ তিওয়ারির বাবা আদিত্য তিওয়ারি।
২০১৬ তে ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত একটি ২২ মাসের শিশুকে দত্তক নেন পুনেনিবাসী আদিত্য। সিঙ্গেল পেরেন্ট হিসেবে তিনি কীভাবে তার সন্তানকে মানুষ করে চলেছেন, সে বার্তাই দিতে চান বিশ্বকে। আদরের ছোট্ট পুত্রের নাম রাখেন অবনীশ। নিজের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চাকরী ছেড়ে দিয়ে সন্তান মানুষ করার পূর্ণ দায়িত্ব নেন ও একইসাথে কাউন্সেলিং এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের বাবা মা কে মানসিকভাবে উজ্জীবিত করার প্রশিক্ষণ দেন। গর্বের সাথে আদিত্য এও জানান যে এখন আর তিনি একলা নন, বরং বাবার সাথে অবনীশ নিজেও সেই সমস্ত বাবা-মা দের চনমনে রাখার দায়িত্ব নিয়েছে। বর্তমানে ৬ বছরে পা দেওয়া অবনীশের বাবা বলেন এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে প্রায় দশ হাজার অভিভাবকের সাথে যুক্ত আছেন তাঁরা এবং পৃথিবীর ২২টি দেশে প্রায় চারশোর বেশী স্থানে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বা ওয়ার্কশপে নিজের কীর্তির দ্বারা উদ্বুদ্ধ করেন অগুনতি মানুষকে। সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকেও আমন্ত্রণ পান তারা। কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে একটি চিঠিতে তিনি এই বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের জন্য একটি আলাদা বিভাগ গড়ার আবেদন জানিয়েছেন ও তা কার্যকরী হয়েছে।
হৃদযন্ত্রে দুটি ফুটো থাকা সত্ত্বেও কোনোরকম ডাক্তারি সাহায্য ছাড়াই সেরে উঠেছে অবনীশ। তবে বর্তমানে দুটি অত্যাবশ্যকীয় সার্জারির প্রয়োজন আছে তার। ফোটোগ্রাফি থেকে সঙ্গীতচর্চা সবই পছন্দ অবনীশের এবং বালেওয়াড়ির একটি স্কুলে নিয়মিত পঠনপাঠন চলে তার, জানান আদিত্য তিওয়ারি। দুধ বা জাঙ্ক ফুড বাদ দিয়ে নিয়মিত ডায়েট অনুসরণ করে খাদ্যতালিকা রয়েছে ছেলের জন্য। বাবা ছেলের যুগলবন্দীতে বেশ আনন্দে আছে, সুস্থ আছে অবনীশ। 'বিশ্বসেরা মা'র সন্মান পাবেন জেনে স্বভাবতই গর্বিত অবনীশ-পিতা আদিত্য তিওয়ারি।