আফগানিস্তানে (Afganistan) তালিবানি শাসন নিয়ে উত্তাল গোটা দুনিয়া। বারংবার খবরের শিরোনামে উঠে আসছে তালিবানি (Taliban) শাসনের চোখরাঙানির দৃশ্য। মুখে শান্তির কথা বললেও আফগানিস্তানে চলছে তালিবানি শাসনের চরম অরাজকতা। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয়দের আফগানিস্তান থেকে ফেরাতে রওনা হয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার (Indian Air force) দুটি বিমান। গতকালের বিমানে ৮৫ জন যাত্রী দেশে ফিরে আসে। আজ অর্থাৎ রবিবার আরও একটি বিমান দেশে ফেরে। সেই বিমানে মোট ১৬৮ জন দেশে ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে ১০৭ জন ভারতীয়, ২৪ জন শিখ আফগান ও ২ জন আফগান সেনেটর রয়েছেন। বিমানটি আজ সকালে দিল্লি গাজিয়াবাদের কাছে হিন্দন এয়ারবেসে অবতরণ করে। বিমানে ফিরে আসা এক মহিলা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন যে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, "মেয়ে ও তাঁর ছেলেমেয়েকে নিয়ে ভারতে চলে এসেছি। আফগানিস্তানের অবস্থা ঠিক নেই। ভারতীয় ভাই বোনেরা আমাদের উদ্ধার করতে সাহায্য করেছে। আফগানিস্তানে তালিবানিরা আমাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। উদ্ধার করার জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানাই।"
অন্যদিকে তালিবানি শাসন থেকে বাঁচতে হুড়োহুড়ি করে দেশ ছাড়ার জন্য বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় কাবুল বিমানবন্দরে। সেই হুড়োহুড়ির মাঝে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। তাঁরা সকলেই আফগান নাগরিক ছিল বলে নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী। আসলে তালিবানি হুকুম থেকে বাঁচতে অনেক আফগান নাগরিক ভিটেমাটি সম্পত্তি ছেড়ে অন্য দেশে ঠাঁই খুঁজছে। এই পরিস্থিতিতে তারা সকলেই বিমানবন্দরের বাইরে জড়ো হচ্ছে যাতে কোনো মতো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া যায়। গতকাল কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে জড়ো হয়েছিল বিশাল পরিমাণ আফগান নাগরিক। বিমানবন্দরের দেওয়াল টপকাতে পারলেই হবে মুক্তি। তা করতে গিয়েই গতকাল পদপিষ্ট হয়ে যান ৭ জন আফগান নাগরিক।
এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, "তালিবান আফগানভূমি দখল নেওয়ার পর থেকেই দেশ ছাড়ার হিড়িক দেখা যাচ্ছে। আজ বিমানে ওঠার জন্য দেওয়াল টপকাতে গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তখনই ৭ আফগান নাগরিকের মৃত্যু হয়। বিমানবন্দর এলাকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। খুব সতর্কতার সাথে ব্রিটিশ নাগরিকদের উদ্ধার করা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে।" অন্যদিকে, এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্দিগো এবং ভিস্তারার যাত্রীবাহী বিমানে করে আটকে থাকা প্রায় এক হাজার ভারতীয়কে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিমানগুলি তাজিকিস্তান ও কাতারে অবতরণ করেছে বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী কাবুলের হামিদ কর্জাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের তরফে বিমান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।