স্কুলে শিক্ষকের হাতে মার খেয়েছেন কম বেশি সকলেই, কিন্তু কোনদিন এরকম ঘটনা ঘটেছে যে, শিক্ষকদের মার খেতে হচ্ছে ছাত্রদের হাতে? হয়তো নতুন ভারতে এটাই দেখার বাকি ছিল। ফেল করানোর কারণে শিক্ষকদের কাছে বেঁধে পেটালো ছাত্ররা। এক ছাত্রী প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার কারণে তাকে পুড়িয়ে মারার ঘটনার পর আরো একবার খবরের শিরোনামে উঠে এলো ঝাড়খণ্ডের দুমকা। শিক্ষকদের গাছে বেঁধে পেটানোর একটি ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে এবং এই ভিডিও দেখে রীতিমতো হতবাক হয়ে গিয়েছেন সকলে। এই ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ছাত্ররা অভিযোগ জানাচ্ছেন, ইচ্ছে করে কম নম্বর দেওয়ার কারণেই শিক্ষকদের গাছে বেঁধে তারা পিটিয়েছেন। এমনকি, সেই সময় তাদের পরনে স্কুলের ইউনিফর্ম পর্যন্ত ছিল।
এই ঘটনার পর ছাত্ররা সেই ভিডিও সমাজ মাধ্যমে আপলোড করে। যদিও ওই ছাত্ররা আদৌ পাস করার যোগ্য ছিল কিনা সেই বিষয়টা এখনো পর্যন্ত যাচাই করেনি কেউ। কিংবা শিক্ষকরা ইচ্ছে করে তাদেরকে কম নাম্বার দিয়েছেন কিনা সেটাও এখনো পর্যন্ত যাচাই করে দেখা হয়নি। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং তৎসহ ১১ জন ছাত্রকে আটক করেছে দুমকা পুলিশ। দুমকার গোপিকান্দার পুলিশ স্টেশনের দারোগা নিত্যানন্দ ভক্তা বলছেন, "ওই স্কুলের শিক্ষক সুমন কুমার এবং করণিক শোনরাম চউরে অভিযোগ করেন তাদেরকে গাছে বেঁধে অত্যাচার করা হয়েছে এবং এই ঘটনার মূলে ছিলেন সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং এগারো জন ছাত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ইতিমধ্যেই ওই ব্যক্তিদের আটক করেছি।"
দুমকা শহরের শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিক ইতি মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। তাদের কাছে বয়ান দেওয়ার সময় ওই ছাত্ররা অভিযোগ জানায়, ওই শিক্ষক তাদের প্রাকটিক্যাল পরীক্ষায় অত্যন্ত কম নম্বর দিয়েছিলেন এবং সেই কারণেই তারা ফেল করেছেন। তার পাশাপাশি কেন কম নাম্বার দেওয়া হয়েছে এর কোন কারণ জানাতে অপারগ ওই শিক্ষকরা। দুমকা, গোপিকান্দার অঞ্চলের ব্লক এডুকেশন এডুকেশন অফিসার সুরেন্দ্র হেমব্রম বলছেন, "আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সমস্ত শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি। ছাত্রদের কথাও আমরা শুনেছি। আমরা জানতে পেরেছি সেই স্কুলের শিক্ষকরা ওই ছাত্রদের অত্যন্ত কম নম্বর দিয়েছেন একটি বিশেষ পরীক্ষায় এবং সেই কম নাম্বারে পরিপ্রেক্ষিতে তারা কোন রকম ব্যাখ্যা দিতেও নারাজ ছিলেন। সেই কারণেই ছাত্ররা এই অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে।"
প্রহৃত একজন শিক্ষক কুমার সুমন বলছেন, ছাত্ররা আমাদের সঙ্গে দেখা করলে আমরা জানতে পারি প্র্যাকটিক্যালের নম্বর রেজাল্টে যোগ করা হয়নি। প্রধান শিক্ষক এটা করেছেন। তাই আমাদের এ ব্যাপারে কিছুই করার ছিল না। এই পুরো ঘটনাটার পিছনে প্রধান শিক্ষকের হাত রয়েছে।