সহ-উপাচার্যের রহস্য মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বাতিল পরীক্ষা-সহ আনুষঙ্গিক কাজকর্ম
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিনের ছুটি ঘোষণা অধ্যাপক দাসের এই অকাল প্রয়াণে
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) সহ-উপাচার্যের রহস্য মৃত্যু যেন নতুন করে খবরের শিরোনামে নিয়ে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়কে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য স্যমন্তক দাসের (Samantak Das) মৃত্যুর খবর যেন শোকস্তব্ধ করে দিয়েছে পুরো যাদবপুর ক্যাম্পাসকে। বুধবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক স্যমন্তক দাসের মৃত্যু সংবাদ সামনে আসে। যাবতীয় প্রশাসনিক কাজ এবং কিছু পিএইচডি ইন্টারভিউ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক হবার কথা ছিল এদিন। কিন্তু এই বৈঠক স্থগিত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুরঞ্জন দাস, রেজিস্টার স্নেহমঞ্জু বসু-সহ সকলেই চলে যান এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে। সেখানেই শেষবারের মতো তাঁরা প্রয়াত সহকর্মীকে দেখার চেষ্টা করেন। ময়নাতদন্তের পর তাঁর দেহ বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার জানিয়েছেন, "আমরা এই দুঃসংবাদ মেনে নিতে পারছি না। অধ্যাপক স্যমন্তক দাস আমাদের অত্যন্ত প্রিয় একজন মানুষ ছিলেন। উনি ছাত্র-ছাত্রী এবং কর্মীদের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। তাঁর অকাল প্রয়াণে বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউয়ের দিন নতুন করে জানানো হবে।" অন্যদিকে যাদবপুরের শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক সমীর চক্রবর্তী বলেন, "দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে ওকে চিনি। চিনি বললে ভুল হবে। আমাদের অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক ছিল। একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আমরা একটি বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারতাম। ওর জ্ঞান এবং মেধা দেখে আশ্চর্য লাগতো। আমাদের মধ্যে অনেক তর্ক হতো। কিন্তু তারপরে আমরা একটা চা নিয়ে ভাগ করে খেতাম।"
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কলা বিভাগ এবং তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন স্যমন্তক দাস। এর আগে ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যলয়ে। গত বছরের শেষের দিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে মিশতেন একেবারে বন্ধুর মতো। বিশেষত উত্তর-পূর্ব ভারতের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত নিবিড়। যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা কলকাতায় এসে আড়ষ্ট থাকে, তাদের এই আড়ষ্টতাকে নিমেষের মধ্যে কাটিয়ে দিতে পারতেন তিনি। কলা, বিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র সংসদ অধ্যাপক দাসের এই অকাল প্রয়াণে অত্যন্ত গভীরভাবে শোকাহত। অন্তত তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের পড়ুয়ারা কিছুক্ষণের জন্য হলেও শেষবারের মতো তাঁদের প্রিয় অধ্যাপককে ক্যাম্পাসে দেখতে চান।