সব বিভাগ সচল রাখা যাবে না, স্বাস্থ্য ভবনকে সাফ জানালো বিসি রায় শিশু হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 11/01/2022   শেষ আপডেট: 11/01/2022 3:07 p.m.
করোনা হাসপাতাল @pixabay

শহরে একের পর এক হাসপাতালে যেখানে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে সেখানেই স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু রাখতে চাপে পড়েছে হাসপাতালগুলি

করোনাভাইরাস এর দৈনিক আক্রান্ত সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গে কিছুটা কম হলেও সোমবার এর রিপোর্ট অনুযায়ী সংখ্যাটা এমনও কিছু একটা কম নয়। সোমবারে রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ হাজারের কিছুটা বেশি, যা পশ্চিমবঙ্গের জন্য খুব একটা ভালো খবর নয়। ইতিমধ্যেই চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়া শুরু করেছেন। আর এবারে সংক্রমনের কোপ পড়লো বিসি রায় শিশু হাসপাতালে। চিত্তরঞ্জন সেবা সদন এর পর এবার আরও একটি শিশু হাসপাতালে ব্যাহত হতে চলেছে স্বাস্থ্য পরিষেবা।

আজকে স্বাস্থ্য ভবন কে দেওয়া একটি চিঠিতে বিসি রায় শিশু হাসপাতাল সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, ইতিমধ্যেই ৪০ জন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে গিয়েছেন, যার মধ্যে অর্ধেক চিকিৎসক। এ ছাড়াও একাধিক টেকনিশিয়ান করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। এর ফলেই স্বাস্থ্য পরিষেবায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিসি রায় শিশু হাসপাতালে তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে সমস্ত বিভাগ চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষত ত্বক এবং এরকম যে সমস্ত বিভাগে একজন বা দুইজন চিকিৎসক থাকেন, সেইসব বিভাগ আপাতত বন্ধ করে দিচ্ছে বিসি রায় শিশু হাসপাতাল।

অন্যদিকে এই হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১১ জন শিশু। ইতিমধ্যেই দুজন শিশুকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়েছে হাসপাতালে তরফ থেকে। চিকিৎসকের সংখ্যা কমে গেলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে হাসপাতালকে। এই কারণেই কোনক্রমে ওপিডি বা বহির্বিভাগ চালু রাখার চিন্তাভাবনা করেছে হাসপাতাল। কিন্তু সমস্যা হয়ে যাচ্ছে অন্য বিভাগের ক্ষেত্রে। অন্য বিভাগে কিভাবে চিকিৎসা চালানো সম্ভব হবে, সেই নিয়ে সন্দিহান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্যান্য হাসপাতালেও পরিস্থিতি অনেকটা একই রকম। নীলরতন সরকার হাসপাতালে আক্রান্ত হয়েছেন বহু চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মী। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সরকারি হাসপাতালে এত সংখ্যক চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মী আক্রান্ত হওয়ায় পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে নীলরতন সরকার হাসপাতালে। পেডিয়াট্রিক সার্জারি সহ একাধিক বিভাগ বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলেও খবর।

অন্যদিকে আইসিএমআর এর নির্দেশিকা বদল করে কিছু করোনাভাইরাস প্রটোকল যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে যদি আপনি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হন তাহলে পঞ্চম, ষষ্ঠ এবং সপ্তম দিনে জ্বর না আসলে সাতদিন পেরোলে আইসোলেশন এর মেয়াদ শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। আইসিএমআর জানাচ্ছে, যেহেতু এই ভেরিয়েন্ট অত্যন্ত বেশি ছড়ায় তাই এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে আইসোলেশন এর মেয়াদ কিছুটা কম। এরপর আর আরটি-পিসিআর টেস্ট করানোর প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়েছে আইসিএমআর। তবে একদম অন্যরকম একটা অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন হাসপাতালের বিরুদ্ধে। কর্তৃপক্ষ দাবি জানিয়েছে, সাতদিন পেরিয়ে যাবার পরেও অনেকেই করোনাভাইরাস এর অজুহাতে কাজে যোগ দিতে চাইছেন না। পরিষেবা সচল রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছে, যদি সাত দিন পরেও কাজে যোগ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি না আসে তাহলে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দেখাতে হবে, নতুবা চাকরি সংকটে পড়বে সেই কর্মীর।