সোনাগাছিতে হবে শপিংমল! কেন্দ্র বিলের বিরোধিতা করে দিল্লিতে প্রতিবাদ জানাবেন যৌনকর্মীরা
কেন্দ্রের নতুন মানবপাচার রোধ বিল যৌনকর্মীদের পেশা ধ্বংস করতে পারে
কেন্দ্র সরকারের (Central Government) নতুন মানবপাচার রোধ (Trafficking Bill) বিল যৌনকর্মীদের পেশা বন্ধ করে দিতে পারে বলে অভিযোগ জানিয়েছে যৌনকর্মীদের সংগঠন দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি। এই বিল যাতে আইনে না পরিণত হয় তার জন্য দিল্লি দরবারে কলকাতার সোনাগাছির (Sonargachi) যৌনকর্মীরা যেতে প্রস্তুত বলে জানা গিয়েছে। এই ট্রাফিকিং পার্সনস বিল ইতিমধ্যেই লোকসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে। এখন রাজ্যসভায় অনুমোদন পেলেই তা আইনে পরিণত হবে। যৌনকর্মীদের আশঙ্কা, এই বিল অনুযায়ী যৌনকর্মীদের উচ্ছেদের সম্ভাবনা রয়েছে। 'দুর্বার' মুখপাত্র মহেশ্বেতা মুখোপাধ্যায় বলেছেন, "আমরাও মানবপাচারের বিরুদ্ধে। যাতে পাচারের শিকার হয়ে যৌন পেশায় না আসেন তা নিশ্চিত করতে আমরা অনেক উদ্যোগের শরিক। কিন্তু কেন্দ্র যা চাইছে তাতে এই পেশা বিপদে পড়বে। আগামী দিনে হয়তো দেখা যাবে সোনাগাছিতে শপিং মল তৈরি হয়ে যাবে। বিপদে পড়বে যৌনকর্মীদের সাথে তাঁদের সন্তানেরাও।"
এই প্রসঙ্গে দুর্বারের আইনজীবী অভিজিৎ দত্ত বলেছেন, "আমাদের দেশে এর আগেই মানবপাচার বিরোধী আইন রয়েছে। সেটির পর এই বিলে কোথাও ইচ্ছুক অনিচ্ছুক যৌনকর্মীদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এর ফলে ইচ্ছাকৃতভাবেও যাঁরা এই পেশায় আসবেন তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু যাঁরা স্বেচ্ছায় এই পেশায় এসেছেন তাঁদের তো বাধ্য করা যায় না। মানবপাচার রোধের নামে যৌনকর্মীদের পেশাটাই তুলে দিতে চাইছে কেন্দ্র সরকার।" দুর্বার সমিতি শঙ্কায় আছে যে এই বিল আইনে পরিণত হলে সোনাগাছি পাড়া আর থাকবে না। সব চলে যাবে প্রোমোটারদের হাতে। যৌনপল্লী ভেঙে তৈরি হবে শপিংমল ও বহুতল। এইজন্য ইতিমধ্যেই যৌনকর্মীদের প্রতিনিধিদল দিল্লি দরবারে পৌঁছে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়া দুর্বার বিভিন্ন বিরোধী দলের সাংসদদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে।
দুর্বার কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজল বসু বলেছেন, "যাঁরা স্বেচ্ছায় এই পেশায় এসেছেন তাঁরা কেনো সরকারি হোমে গিয়ে ডাল ভাত খাবেন? দয়ার দানে থাকবেন কেন? পুনর্বাসন হবে কেন? নোট বাতিলের সময় বা করোনার সময় যৌনকর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তখন সরকার কোথায় ছিল? আসলে সরকার চায় যৌনকর্মীরা ফের বিপদে পড়ুক। তাঁদের সন্তান চোর-ডাকাত হোক। কিন্তু আমরা সেটা হতে দেবো না। প্রয়োজন পড়লে সুপ্রিমকোর্ট অবধি যাব। পেশাকে বাঁচাতে পথেও নামবো। দিল্লির রাজপথে প্রতিবাদ জানাবো।"