খাস কলকাতায় মিড ডে মিলে কোটি কোটি টাকার কেলেঙ্কারির অভিযোগ, তদন্তে শিক্ষা দপ্তর
সূত্রের খবর, এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই মাসখানেক ধরে বেপাত্তা রয়েছেন
খাস কলকাতায় মিড ডে মিলে বিরাট অংকের দুর্নীতির অভিযোগ মিড-ডে-মিল ব্যবস্থার গোটা সিস্টেমটাকে নড়িয়ে দিল। জানা গিয়েছে পুরো ব্যাপারটা ঘটেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে একেবারে অন্ধকারে রেখে। ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ রাখা হলেও এই ঘটনায় অনেকেই জড়িত রয়েছেন বলে খবর। কসবা এলাকার শিক্ষাভবনের তিনটি অফিসকে ইতিমধ্যেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগপত্র খতিয়ে দেখার এবং তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেবাশীষ দত্ত নামে এক জনৈক ব্যক্তি অভিযোগ জানিয়েছেন, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, একাউন্ট বিভাগের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে অগ্রিম অর্থ প্রদান করেছেন। আর এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটা বড় অংকের লেনদেনের ব্যাপার। আর এই লেনদেনের মধ্যেই আছে গলদ।
কলকাতার স্কুলে জায়গার অভাব থাকার কারণে বিভিন্ন কমিউনিটি কিচেনে মিড ডে মিলের রান্না করা হয়। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই সমস্ত রান্না করার দায়িত্বে থাকে। সেই জন্য এই সমস্ত সংস্থাকে মিলের ভিত্তিতে টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু, এবারে সেই টাকাই নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছে মিড-ডে-মিল দপ্তরের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী জানিয়েছেন, অগ্রিম অর্থে দুর্নীতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। এছাড়াও বাড়তি চাল কেনার হিসাব, সহ আরো বেশ কিছু হিসাবে গরমিল রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ছাত্র সংখ্যা অনুপাতে যে পরিমাণ চাল পাওয়ার কথা তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণ চাল সংগঠনগুলি এফসিআই এর কাছ থেকে কিনেছে। যার ফলে সরকারি তহবিল থেকে সরাসরি টাকা চলে গেছে।
প্রমাণ প্রসঙ্গে, দেবাশিস বাবু বলেছেন, 'আমাকে বিশ্বাস করতে হবে না। কলকাতা জেলা মিড-ডে-মিল অফিসে ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ সালের সমস্ত হিসেব অডিট করানো হোক তাহলে ব্যাপারটা সামনে চলে আসবে। এছাড়া রাইস পারচেস স্টেটমেন্ট যদি আপনারা দেখতে পারেন তাহলেও কিন্তু এই বিষয়টি আপনাদের নজরে পড়বে।' ব্যক্তিগত সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে মিড-ডে-মিল দপ্তরে এই নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়ে গেছে। অভিযুক্ত কর্মীকে বিগত এক মাসেরও বেশি সময় কাজকর্ম থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। মিড ডে মিল প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কার্তিক মান্না বলেছেন, সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং অগ্রিমের টাকা গত মাসে অ্যাডজাস্ট করে দেওয়া হয়েছে।
তাহলে একটাই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, ভিত্তিহীন অভিযোগই যদি হয়, তাহলে শিক্ষা দপ্তরের তিনটি অফিসকে কেন এই সংক্রান্ত তদন্ত করতে বলা হলো? আর ২ বছরের টাকা গতমাসে কেনো অ্যাডজাস্ট করতে হলো? অনেকগুলি প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, তবে যাই হোক, খাস কলকাতার বুকে এত বড় একটি কেলেঙ্কারির অভিযোগে চাপে পড়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। রাজ্য সরকার যদি সরাসরি এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে তাহলে কিন্তু রাজ্যের মিড ডে মিল দপ্তরের উপরে একটা ভারী চাপ আসার সম্ভাবনা রয়েছে।