এবার মমতা-জগদীপ দ্বন্দ্বে এন্ট্রি নিলেন অমিত মিত্র, নজিরবিহীন আক্রমণ রাজ্যপালকে
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে ডঃ জেকিল ও হাইড বলে কটাক্ষ করেছেন অমিত মিত্র
এবারে নবান্ন এবং রাজ্যপাল দ্বন্দ্বের মধ্যে প্রবেশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের মুখ্য অর্থ উপদেষ্টা এবং রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। বিজয়া সম্মিলনীর আসরে মেলা উষ্ণতার ছোঁয়া মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে উধাও হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে এদিন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে ডঃ জেকিল এন্ড হাইড বলে কটাক্ষ করলেন অমিত মিত্র। যদিও এই ঘটনাটির সঙ্গে রাজ্যের শিল্প পরিস্থিতি সরাসরি ভাবে জড়িত। সোমবার রাজ্য সরকারের ডাকে বিজয়া সম্মিলনীতে সস্ত্রীক উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। সেই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় রাজ্যপালকে আহবান জানান যেন তিনি রাজ্যের শিল্প আনতে সাহায্য করেন।
জবাবে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তিনি বলেছিলেন, "রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে আমার কর্তব্য এবং রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের জন্য আমাকে যা করতে হবে তা আমি করবো। পশ্চিমবঙ্গ অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে। এই কাজে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যমের প্রশংসা অবশ্যই প্রাপ্য।" কিন্তু ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই রীতিমতো পাল্টি খেলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। মঙ্গলবার পরপর দুটি টুইট করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর লিখলেন, " মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজিবিএস ( বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলন ) নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে সব ক্ষেত্রেই তথ্য এবং স্বচ্ছতা বজায় রেখে জবাবদিহি করা যায়। শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন এবং বিবৃতি দিয়ে নিজের কাজ জাহির না করি।"
পরবর্তীতে তিনি লেখেন, " এক বছর আগেও এই পাঁচটি সম্মেলনের তথ্য চেয়ে পাওয়া যায়নি। জমিতে আসলে কেমন ফসল হয়েছে, তাতে কিন্তু জমির আসল পরিচয়। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা বিনিয়োগের জন্য অপরিহার্য এটা। " এরপরেই নবান্ন এবং রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাত নতুন মোড় নিতে শুরু করে। এতদিন পর্যন্ত শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার কয়েকজন মন্ত্রী এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এর মধ্যে এই সমস্যাটা ছিল। কিন্তু এবার এই দ্বন্দ্বে প্রবেশ করলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে দুদিন দু'রকম মন্তব্য করার অভিযোগ নিয়ে অমিত মিত্র লিখলেন, " শিল্প সম্মেলন নিয়ে মাননীয় রাজ্যপালের টুইট অনেকটা ডঃ জেকিল এন্ড মিস্টার হাইড এর একেবারে শ্রেষ্ঠ দৃষ্টান্ত। ৯ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর পরবর্তী শিল্প সম্মেলন করার পরিকল্পনাকে তিনি দৃঢ়ভাবে সমর্থন করলেন সকলের সামনেই। ঠিক তারপরের দিন মুখ্যমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীকে (আমি) লেখা চিঠি তুলে ধরে তিনি টুইটে বিষোদগার করতে শুরু করলেন। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমি তাকে নিজে শিল্প সম্মেলন এর উপর তথ্য সম্বলিত চার পাতার একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম। সেই চিঠি পড়ার পরেও তিনি এরকম একটি প্রতিক্রিয়াঃ দিলেন, যা রাজ্যের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।