নন্দীগ্রামে হাইভোল্টেজ ম্যাচ! নির্বাচনী প্রচারও ভিন্নতর। শেষ হাসি হাসবে কে?
রাজনৈতিক প্রচারে বৈচিত্র্যের শেষ নেই। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় বিশেষ চমক সিপিআইএম সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী মীনাক্ষি মুখার্জির দৈনিক পায়ে হেঁটে প্রায় ২০ কিলোমিটার নির্বাচনী প্রচার
কারোর বাড়ির উঠোনে মুখ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করছেন, "আপনারা কেমন আছেন? আমাকে চেনেন তো? আমি আপনাদের ঘরের মেয়ে!" আবার কোনো অশীতিপর বয়স্কাকে জড়িয়ে ধরে বলছেন, "আপনাদের থেকে ভালোবাসা পাবো তো?"
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান বিধানসভা নির্বাচনে এমন দৃশ্য দেখা গেল নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিআইএমের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী মীনাক্ষি মুখার্জির নির্বাচনী প্রচার অভিযানে। নন্দীগ্রাম বিধানসভাটি যে এবারের নির্বাচনের হাইভোল্টেজ ম্যাচ হতে চলেছে, তা নির্বাচনী পর্যবেক্ষক একাংশের মত। একদিকে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অপর দিকে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে দলছুট বিজেপির প্রধান মুখ নন্দীগ্রাম আন্দোলনের প্রধান যোদ্ধা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করছেন সিপিআইএম সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী মীনাক্ষি মুখার্জি বলে সূত্রের খবর। উল্লেখ্য বিষয়, মীনাক্ষি এখন ঘরের মেয়ে! স্থানীয় সূত্র খবর, প্রচারে সাড়া জাগাতে দৈনিক প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ স্রেফ পায়ে হেঁটে নির্বাচনী প্রচার সারছেন। অন্যদিকে সেখানে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক সর্বপ্রকার সুযোগ - সুবিধাযুক্ত স্পেশাল গাড়ি নিয়ে নির্বাচনী প্রচার করছেন, সেখানে সিপিআইএম প্রার্থী মীনাক্ষির ভরসা পায়ে হাঁটা পথ কিংবা টোটোয় করে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে যাওয়া।
পালাবদলের পর নন্দীগ্রামের সিপিআইএমের প্রত্যেকটি কার্যালয় কার্যত ঝাঁপ বন্ধ অবস্থায় ছিল। কমরেড মীনাক্ষি নিজের চেষ্টায় মানুষের মনে সাহস জুগিয়ে একের পর এক পার্টি কার্যালয় খুলছেন বলে সিপিআইএম সূত্রে খবর। এই প্রসঙ্গে মীনাক্ষির স্পষ্ট বক্তব্য, "মানুষ ভয় ভেঙে উৎসাহে রাস্তায় বেরিয়েছে লাল ঝাণ্ডার সাথে হাঁটছে। দশ বছর ভোট করতে দেয়নি, প্রচুর মেরেছে ; পিটিয়েছে, পুলিশকে সাথে নিয়ে হুমকি দেখিয়েছে, কেস দিয়েছে। মানুষ গুটিয়ে ছিল, ভয়ে ছিল। রুটিরুজির প্রশ্ন তো! চাকরি তো দেয়নি। পেটের দায় সবচেয়ে বড় দায়। লাল ঝাণ্ডাকে যখন মানুষ সাহসের সঙ্গে নন্দীগ্রামের মাটিতে দেখেছে, মানুষ ভয় ভেঙে বেরিয়ে এসেছে।"
মীনাক্ষি মুখার্জির এই নির্বাচনী প্রচার যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ তা রাজনৈতিক বিশ্লেষক একাংশের মত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় নন্দীগ্রামবাসীর কথায়, "তৃণমূল বিজেপি কাকে ভোট দেব বলুন তো? দুই প্রার্থী তো মুদ্রার এ পীঠ ও পীঠ। তার মীনাক্ষি মেয়েটিকে ঘরের মেয়ে মনে হচ্ছে।" নন্দীগ্রামের আনাচে কানাচে এখন মীনাক্ষির আলোচনা, সূত্রের খবর! তবে শেষ হাসি কে হাসবে তার উত্তর পেতে ২ রা মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে!