মর্মান্তিক! প্রথমে হাতির আছাড়ে আহত, পরে নদী সাঁতরে প্রাণ বাঁচানো
সাহসী পিন্টুর এই রোমহর্ষক কাহিনিতে শিউরে উঠেছেন অনেকেই
একেই বলে হয়তো রাগ! তবে রাগের পাত্র মানুষ হলেও অপরপক্ষ কিন্তু মানুষ নয়। স্রেফ একটি দলছুট হাতি। রাগে একজন তরতাজা যুবককে রীতিমতো শুঁড়ে তুলে নদীর জলে আছড়ে ফেলা। সেখানেই শেষ নয়, নদী থেকে ডাঙায় উঠতে গেলে রাগে বৃংহণ। বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে আহত অবস্থায় শীতের রাতে নদী সাঁতরে ওপারে ওঠা। হাতির এমন 'জমিদারি মেজাজ' দেখে রীতিমতোই শিউরে উঠছেন এলাকাবাসী। বিশ্বাসই হচ্ছে না গজরাজের এমন দৌরাত্ম্যের কথা শুনে।
ঘটনাটি কোথাকার? পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) গড়বেতায় ঘটেছে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা। পেশায় মৎস্যজীবী পিন্টু গুড়িয়া এমন মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী। বাবার সঙ্গে প্রতিদিনের মতোই শিলাবতী নদীতে মাছ ধরতে যাচ্ছিলেন। এমন সময় যাত্রাপথে এক দলছুট হাতির খপ্পরে পড়ে পিন্টু। বাবা ধীরেন গুড়িয়া কোনমতে ছুটে পালাতে পারলেও পিন্টু কিন্তু পারেনি। সম্মুখ সমরে হাতি শুঁড়ে তুলে নিয়ে আছড়ে ফেলে। বরাত জোরে পিন্টু গিয়ে পড়ে নদীর জলে। ততক্ষণে পিন্টুর শরীর দিয়ে রক্তের বন্যা বয়ে চলেছে। প্রাণ বাঁচাতে পাড়ে ওঠার চেষ্টা করতেই হাতির তীব্র গর্জন। না, পিন্টুর আর সাহসে কুলায়নি গজরাজের কাছে যেতে। অগত্যা নদী সাঁতরে ওপারে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে সাঁতরে পেরিয়ে যাওয়া। প্রাণে বাঁচলেও পিন্টুর মন থেকে সেই আতঙ্ক ছাড়ছে না।
ঘটনাটি সোমবার রাতের। নিত্যদিনের মতোই মাছ ধরতে বেরিয়ে ছিল পিন্টু এবং তাঁর বাবা। আর পথের মাঝেই এমন রোমহর্ষক ঘটনার সাক্ষী তাঁরা। প্রাথমিক অবস্থায় বাড়িতে চিকিৎসা হলেও কমেনি পিন্টুর অস্থিরতা। তাঁকে মঙ্গলবার গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পিন্টু। হাতির দাপটের কথা ততক্ষণে গোটা অঞ্চলে চাউর হয়েছে। চার পায়ের শান্ত ধীর-স্হির প্রাণীর এমন দৌরাত্ম্য অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য। একাংশ বলছেন, হাতিটি নিশ্চয়ই আগে কোথাও ঘা খেয়েছে কিংবা দলছুট হয়ে আতঙ্কিত। তবে পিন্টুর সাহসিকতায় অনেকেই বাহবা দিয়েছেন। শীতের রাতে আহত হয়ে নদী সাঁতরে নিজের প্রাণ বাঁচানো চাট্টিখানি কথা নয়। এ তো সিনেমার চিত্রনাট্যকেও ফেল মারায়, বলছেন একাংশ।