ষষ্ঠীর সকালে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, সিউড়িতে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু তিন কিশোরের
বাড়ির ছেলেদের হারিয়ে রীতিমতো আকাশ ভেঙে পড়েছে ওই তিন পরিবারের মাথায়
সারা পশ্চিমবঙ্গ বর্তমানে শারদীয়ার আনন্দে ভাসছে। দূর্গা পূজার মহাষষ্ঠী আজকে। দিকে দিকে শুরু হয়ে গেছে দেবীর বোধন। কিন্তু আজকের দিনেই একটি মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় বাড়ির ছেলেদের হারালো বীরভূমের তিনটি আদিবাসী পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের সিউড়িতে। সোমবার মহাষষ্ঠীর দিন সকালবেলা প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সিউড়ি আমোদপুরের রাস্তায় ট্রাকের ধাক্কায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল তিন কিশোরের। পলাতক ট্রাকচালককে গ্রেপ্তারের দাবিতে সকাল থেকে সিউড়ি আমোদপুরের রাস্তায় অবরোধ শুরু করেছেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের বেশকিছু মানুষ। পরিস্থিতি শান্ত করতে এলাকায় পৌঁছেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন এলাকার ডিএসপি সহ একটা বিশাল পুলিশবাহিনী।
১৭ বছর বয়সী রাজেশ টুডু, ১৬ বছর বয়সী মনোজ হেমব্রম এবং ১৩ বছর বয়সী রোহিত বেসরা - এই তিনজন সিউড়ি আমোদপুর এলাকার বাসিন্দা। সোমবার সকালে তারা বেরিয়েছিলেন প্রাতঃভ্রমণ করতে। সিউড়ি আমোদপুর রাজ্য সড়কের ধার দিয়ে তিনজন হাঁটছিল। আচমকাই পিছন থেকে একটি ট্রাক এসে প্রথমে ধাক্কা মারে রোহিতকে। তারপর ট্রাকটি পালাতে গিয়ে একে একে মনোজ এবং রাজেশকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়। একজনকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, ট্রাকটি পুরন্দরপুর থেকে আমোদপুরের দিকে যাচ্ছিল।
রোহিতের দাদু অলোক বেসরা বলছেন, "নাতির এভাবে মৃত্যুতে আমরা হতবাক। বন্ধুদের সাথে বেরিয়ে এমনটা ঘটবে আমরা ভাবতেই পারিনি। পুলিশকে বলেছি ওই ট্রাককে ধরে ওই চালককে দ্রুত কড়া শাস্তি দিতে হবে।" সাতসকালে তিন কিশোরের এই মৃত্যুতে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সিউড়ি আমোদপুর জাতীয় সড়ক। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। প্রথমে আমোদপুর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়। এরপর ডিএসপি নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী সেখানে যায়। তাদের একটাই দাবি, ঘাতক ট্রাক চালককে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। ডিএসপি তাদের সঙ্গে কথা বলে ট্রাকচালককে গ্রেফতার করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ওই জাতীয় সড়কের ওপর অবরোধ এখনো চলছে।