থিম বনাম সাবেকিয়ানা— সাবেক পুজোয় মাতোয়ারা এবার পুজোকমিটি
করোনা আবহে থিম পুজো সরছে সাবেকিয়ানায় আর ঐতিহ্যবাহী পুজো প্রাধান্য দিচ্ছে সাবেকিয়ানাকেই। পুজো পরিক্রমায় সামিল পরিদর্শক।
থিম বনাম সাবেকিয়ানা— এ লড়াই চলছেই। তবে, করোনা পরিস্থিতিতে বাজেট কমাতে অনেক পুজো মণ্ডপই থিমের পুজো ছেড়ে সাবেকি পুজোর দিকে ঝুঁকেছেন। আবার, বেশ কিছু পুজো এবছর দুটি বিষয়কেই সমানতালে বজায় রাখতে চেয়েছেন।
হাওড়ার উল্লেখযোগ্য কিছু পুজো মণ্ডপ ঘুরে এবারে তাই বিচিত্র অভিজ্ঞতা। শিবপুর ষষ্ঠিতলা বারোয়ারী, হাওড়ার উল্লেখযোগ্য পুজোগুলির মধ্যে একটি। এখানকার পুজো এবারে ৯৬তম বর্ষে পদার্পণ করল। এ বছরের ভাবনা—"চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির।" করোনা ও সমসাময়িক নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে এগিয়ে যাবার মন্ত্র দিতেই এ বছর থিমের বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন তারা বাংলার নানা পুরোনো ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। থিম যেন কখনই সাবেকিয়ানাকে ছাপিয়ে না যায়, তাই মন্ডপসজ্জা থেকে শুরু করে মাতৃ প্রতিমা সবেতেই সামঞ্জস্য বজায় রেখেছেন তাঁরা। সদস্য রবিন পাঠক জানালেন, কোভিড বিধি মেনেই সমস্ত আয়োজন করছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই একাধিক পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন তাঁরা।
কয়েক পা এগিয়েই হাওড়ার আর একটি ঐতিহ্যমণ্ডিত পুজো মন্দিরতলা সর্বজনীন, এখানকার পুজো এ বছর ৯৭ তম বর্ষে পদার্পণ করল। মুর্শিদাবাদের জমিদার বাড়ির আদলে মণ্ডপ নির্মিত হয়েছে, ভাবনাতেই সাবেকিয়ানা, ফলে মণ্ডপসজ্জা ও মাতৃপ্রতিমাও সাবেকি ধরণের। অত্যাধুনিক থিমের ভাবনায় বিশ্বাসী নয় বলেই ৯৭ বছর ধরে সাবেকিয়নাকে বহন করে নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন এই কমিটি।
এরই পাশাপাশি শিবপুরের আর একটি উল্লেখযোগ্য পুজো হল মহাদেব স্মৃতি সংঘ, এখানকার পুজো এবারে ৩৪তম বর্ষে পদার্পণ করল। কখনই থিম পুজোর রেষারেষির মধ্যে থাকেনি এই পুজো। সাবেকি মণ্ডপের পাশাপাশি সাবেকি একচালার প্রতিমা এই পুজোর মূল আকর্ষণ। কমিটির তরফে মানস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "নিষ্ঠাভরে মায়ের পুজোই প্রধান বিষয়। সপ্তমী থেকে নবমী প্রায় ১৭কেজি ভোগের ব্যবস্থা করা হয়। সব নিয়ম মেনেই প্রতি বছর আমরা পুজো করে থাকি। থিম পুজোয় কোনোকালেই বিশ্বাসী নই বলেই সাবেকি পুজোয় নিয়মকে প্রাধান্য দি।"