টেট-এও এবার ‘খেলা হবে’, চাকরির দাবীতে চুঁচুড়ায় স্লোগান তুলে বিক্ষোভ টেট উত্তীর্ণদের
২০২৪-এর ভোটের আগেই এই খেলায় না সেমসাইড গোল খেয়ে যায় তৃণমূল : বিজেপি
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ ঘিরে জটিলতা যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রাজ্য সরকারের। এবার প্রতিবাদ হুগলীর চুঁচুড়ায়। তবে এবারের প্রতিবাদ একটু ভিন্ন রকমের। রাজ্য সরকারের জনপ্রিয় ডায়লগ ‘খেলা হবে’-কেই সঙ্গী করে রাজ্য সরকারকে খোঁচা টেট উত্তীর্ণদের। দুর্গা পুজার আগেই শিক্ষক নিয়োগের দাবীকে ঘিরে এদিন মিছিল হয় হুগলীর জেলা সদরে। পা মেলান প্রচুর টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী। মিছিল শেষে জেলাশাসকের দপ্তরে স্মারকলিপিও জমা দেন তাঁরা।
টেট নিয়ে আন্দোলনকারীদের দাবী, ২০১৪ সালে পরীক্ষা দিয়ে তাতে পাস করে যাওয়ার পরেও দীর্ঘ সাত বছরেও নিয়োগপত্রের মুখ দেখেননি তাঁরা। এক আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীর কথায়, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ২০ হাজার টেট উত্তীর্ণ রয়েছেন। তাঁদের সবাইকে নিয়োগ করা হবে। পর্ষদ সভাপতি এক রকম তথ্য দিচ্ছেন। অন্য মন্ত্রী আরেক রকম তথ্য দিচ্ছেন। মাঝখান থেকে তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র আসছে না। তাঁদের সাফ কথা, কোনও টালবাহানা নয়, মুখ্যমন্ত্রী যেমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা যেনতেনপ্রকারেণ রক্ষা করা হোক।
যদিও এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, আন্দোলনকারীদের জানা উচিত ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষায় পাস করা মানেই প্যানেলভুক্ত হওয়া নয়। তার কথায় উত্তীর্ণদের মধ্যে ট্রেনড, নন ট্রেনড অনেকেই ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এমনও অনেকে আছেন, যাঁরা মৌখিক পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, গত ২১শে জুন নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দেন, রাজ্যে প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক মিলিয়ে মোট ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। শুধু তাই নয়, তিনি বলেন, পুজোর আগেই উচ্চ প্রাথমিকে ১৪ হাজার এবং প্রাথমিকে সাড়ে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। পুজোর পরে আগামী বছর মার্চ মাস পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ করা হবে আরও সাড়ে সাত হাজার।
তবে এরই মাঝে চাকরিপ্রার্থীদের মুখে ‘খেলা হবে’ স্লোগান শুনে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপিও। বিজেপির হুগলী সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চা সভাপতি সুরেশ সাউ-এর কথায়, ‘শুধুমাত্র তৃণমূল করে বলে, তৃণমূল আমলে পরীক্ষা না দিয়েও চাকরি পাওয়ার মতো ঘটনা দেখা গেছে। যারা প্রকৃত পরীক্ষা দিয়ে পাস করে, তাদের চাকরি জোটে না। মাননীয়া খেলা হবে স্লোগান দিয়েছিলেন। কিন্তু চাকরি দেওয়ার খেলা হচ্ছে কই? নিজেদের মধ্যেই খেলায় মগ্ন হয়ে গিয়েছেন তাঁরা’। তাঁর সংযোগ, ২০২৪-এর ভোটের আগেই এই খেলায় না সেমসাইড গোল খেয়ে যায় তৃণমূল। যদিও এর পাল্টায় জাঙ্গিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা হুগলী-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেছেন, চাকরিপ্রার্থীরা মুখ্যমন্ত্রীর উপর আস্থা রাখুন। বিজেপির ফাঁদে পা দেবেন না।