‘বুথস্তরে সংগঠন মজবুত করতে হবে’, সাংগঠনিক দুর্বলতা স্বীকার করে দলকে বার্তা শুভেন্দুর

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 02/10/2021   শেষ আপডেট: 02/10/2021 3:19 p.m.
facebook.com/SuvenduWB/

ভোটের আগে রাজ্যের সংগঠনকে ''মজবুত' বলে সবথেকে জোর গলায় দাবী করেছিলেন শুভেন্দুই

বিধানসভা নির্বাচনের পর অতিক্রান্ত পুরো চার-চারটি মাস। নির্বাচনের আগে ভারতীয় জনতা পার্টির বিভিন্ন নেতা, বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারীর গলায় যে আস্ফালন শোনা গেছিল, তা কার্যত ধুলোয় মিশিয়ে যায় আজ থেকে ঠিক চার মাস আগে, ২রা মে তে। নির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপি সংগঠনকে মজবুত তকমা দেওয়া শুভেন্দু গতকাল অবশেষে স্বীকার করে নিলেন, গোড়াতেই আছে গলদ।

শুক্রবার বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে অভ্যর্থনা জানানোর উদ্দেশ্যে বিধাননগরে আয়োজন করা হয়েছিল সুকান্ত সন্ধ্যা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে নতুন রাজ্য সভাপতির উদ্দেশ্যে শুভেন্দু বার্তাপ্রদান করে বলেন, ‘আমি আশা করব নতুন রাজ্য সভাপতি এই বিষয়ে (সংগঠনকে মজবুত করার বিষয়ে) খানিকটা যত্নবান হবেন। এই সরকারকে সরাতে হলে বুথ স্তরে সংগঠন মজবুত করতে হবে। আমি দলে নতুন। পুরনো সাংগঠনিক বিষয় জানি না’। এরপরেই শুভেন্দুর দাবী, ‘আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতার কারনেই নির্বাচনী রাজনীতিতে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি’। উল্লেখ্য, ভোটের আগে দিল্লি গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সাথে বৈঠক করাকালীন এই শুভেন্দু অধিকারীই রাজ্যের সংগঠনকে মজবুত বলে দাবী করেছিলেন।

গতকাল ‘বুথ স্তরে সংগঠনের অভাব আছে’ বলে দাবী তুলে তার স্বপক্ষে পরিসংখ্যানও পেশ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘বিজেপির পক্ষে সমর্থন প্রচুর রয়েছে। যেখানে ৩৮.১৩ শতাংশ ভোট পেয়ে কেন্দ্রে সরকার গড়া যায়, সেখানে এ রাজ্যে আমরা এতো বিপুল পরিমানে ভোট পেয়েও বিধায়ক সংখ্যা বাড়াতে পারিনি। ৪৭ শতাংশের বেশি ভোট বিপরীত দিকে একত্রিত হয়েছে। রাজ্যে বুথের সংখ্যা ৭৭ হাজার। এর মধ্যে ১২ হাজার বুথে কমিটি তৈরি করা খুব কঠিন। এটা আমরা তৈরি করতে না পারলে, একটা বড় আসনে জিতেও আমরা সরকার গঠন করতে পারব না’।

তবে এর মাঝেও শুভেন্দুর বার্তাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মনে করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, ‘পুরনো বিজেপির সাংগঠনিক বিষয় জানিনা’ বলে শুভেন্দু আদতে সাংগঠনিক দায়িত্ব সুকান্ত মজুমদারের ঘাড়ে চাপিয়ে নিজে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার প্রচেষ্টা করছেন। তবে নিজেকে কোনও রকম জটিলতার মধ্যে না ফেলে শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘বিজেপিতে তিন ধরনের নেতা কর্মী আছেন। একদল আদর্শগত কারনে রয়েছেন। আর একদল বিজেপি সরকার গড়বে ভেবে নাম লিখিয়েছিলেন। বাকি একটা অংশ নৈতিক কারনে লড়াই করবেন বলে সব ছেড়ে এসেছেন। এরপরেও একটা অংশ আছে, যারা বিনা স্বার্থে মনে করছেন নরেন্দ্র মোদীই সঠিক নেতা এবং বিজেপিই সঠিক মঞ্চ। ওখানে যাই, বাংলা বাঁচাই। আমি ওই দলে পড়ি’। যদিও তাঁর মুখের কথা নয়, একমাত্র সময়ই বলতে পারবে তিনি কোন দলের দলী?