'উৎসব হোক মানবতার প্রয়োজনে' এই বার্তা নিয়ে রাখীবন্ধন উৎসব পালন করল বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন
বিদ্যালয়ের ছোট পড়ুয়াদের হাতে বানানো রাখী পরলেন অসংখ্য মানুষ
রাখীবন্ধন সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক। কেবল ভাই-বোন নয়, সমাজের সর্বস্তরে মানুষে-মানুষে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়ে ওঠে এই উৎসবের মধ্য দিয়ে। মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সেখানে কেবল একা বাঁচা নয়, সকলকে নিয়েই তার পথচলা। সকলের পাশে থাকা, হাতে হাত বাড়িয়ে দিতেই তো এই উৎসব-অনুষ্ঠানের সার্থকতা।
সেই উদ্দেশ্যকে সঙ্গে নিয়ে রাখীবন্ধন উৎসবে সামিল হল দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাসন্তী ব্লকের জয়গোপালপুর গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রকের উদ্যোগে বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতনে সাড়ম্বরে পালিত হল রাখীবন্ধন উৎসব। পোশাকী নাম 'সংস্কৃতি দিবস উদযাপন'। বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন গুণীজন। সকলের সাদর সান্নিধ্যে পালিত হল রাখীবন্ধন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাসন্তী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কামালউদ্দিন নস্কর। এছাড়া শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ গোকুলচন্দ্র নস্কর, জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ দিলীপ নস্কর প্রমুখ। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রক এবং বাসন্তী সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের পূর্ণ সহযোগিতায় এমন আনন্দমুখর অনুষ্ঠান আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মধুসূদন মণ্ডল রাখীবন্ধন উৎসবের গুরুত্ব তুলে ধরেন। কচিকাঁচাদের নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃত্তি-সহ রাখীবন্ধন উৎসবের প্রকৃত ইতিহাস ও গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। স্কুলের ছাত্রী দেবস্মিতা পলুই নজরুলের 'মোরা একই বৃন্তে দু'টি কুসুম' গানটি পরিবেশন করেন। গোটা অনুষ্ঠানটি সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছিলেন লাবণ্যময়ী মণ্ডল এবং পিয়ালী কুণ্ডু।
সংস্থার সম্পাদক বিশ্বজিৎ মহাকুঢ় বলেন, "রাখীবন্ধন উৎসব আমাদের প্রাণের উৎসব। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মানবতাবোধ, জড়িয়ে আছে সৌভ্রাতৃত্ববোধ। আজকের দিনে সকলে মিলিত হয়ে সেই অঙ্গীকার করলাম।" বিবেকানন্দ শিক্ষানিকতনের সহশিক্ষক সোমনাথ মণ্ডল বলেন, "রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার ধরতেই অস্ত্র নয়, বরং এই রাখীবন্ধন উৎসব শুরু করেছিলেন। বঙ্গভাগের বিরোধিতায় হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলেছিলেন। এই উৎসব তো সেই বার্তাই বহন করে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নয়, বরং সকলের মধ্যে গড়ে উঠুক সুন্দর, মধুময় জীবন।"