প্রতিবাদই কাল হল, নেশায় বুঁদ ছোটভাইয়ের হাতে খুন বড়ভাই
পুলিশের জালে নেশাখোর ভাই-সহ মাদক চক্রের পান্ডা
ছোটভাই সবসময়ই নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে। তিন ভাইয়ের সংসারে এই নিয়ে অশান্তির শেষ নেই। রোজদিন কলহ, চিৎকারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। বহুবার এলাকাবাসী সতর্ক করে দেওয়ার পরেও থামেনি ছোটভাইয়ের নেশার দাপট। কিন্তু এই ঘটনার পরিণামে নেশাখোর ছোটভাই যে নিজের দাদাকে খুন করে ফেলবে এ কথা বোধহয় এলাকাবাসীর কেউ কখনও ভাবেননি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) খড়্গপুর পুরসভার (Kharagpur Municipality) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লী এলাকার ঘটনা। ছোটভাই জি সুমিত রাও বড়ভাই জি নভজিৎ রাও-কে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মেজভাই জি সুমন রাও। মেজভাই সুমন জানিয়েছেন, ছোটভাই মাদক নিত। এই নিয়ে সংসারে অশান্তির শেষ ছিল না। ঘটনার দিন ছোটভাই তার বন্ধুদের নিয়ে বাড়িতে বসে নেশা করছিলেন। এই দৃশ্য দেখে বড় ও মেজভাই প্রতিবাদ করেন। নেশাখোর সুমিতের বন্ধুদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। এই ঘটনার পর নেশায় বুঁদ সুমিত তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। কিছুক্ষণ পর ছোটভাই সুমিত কার একটা মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। সেই সময় বড়ভাই নভজিৎ উঠোনে বসে মুরগিকে খাবার দিচ্ছিলেন। আর তৎক্ষনাৎ পেছনে সজোরে বাইকের ধাক্কা মারে অভিযুক্ত সুমিত। কংক্রিটের সঙ্গে ধাক্কায় মাথায় তীব্র চোট লাগে। ঘটনাস্থলেই নভজিতের নাক-কান দিয়ে রক্ত বেরিয়ে যায়। তাঁকে প্রথমে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থা আরও খারাপ হলে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। যদিও রাত আটটা নাগাদ মৃত্যু হয়েছে ৪৫ বছর বয়সী নভজিতের।তিন ভাইয়ের সংসারে বড়ভাই নভজিতের খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে টেক মার্কেটে একটি ইডলি-ধোসার দোকান ছিল। এখন তাঁদের সংসারে দিশাহীন অবস্থা বলে জানিয়েছেন মেজভাই সুমন রাও। তাঁর দাবি, "এই নেশাখোরের যেন কঠিন শাস্তি হয়।"
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ বড়সড় মাদক চক্রের সন্ধান পেয়েছে বলে সূত্রের খবর। অভিযুক্ত সুমিত রাও-সহ ওই ঘাতক বাইকের মালিক আনোয়ারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজনের জড়িত থাকার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মাদক চক্রের আরও কয়েক জনের সন্ধানে তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকাবাসীদের দাবি, দীর্ঘদিন এই অঞ্চলে এই নেশাখোরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ তাঁরা। দিনেদুপুরে নেশার দাপটে এলাকায় বেরোনো কঠিন হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের। যদিও প্রশাসনের দাবি খুব শীঘ্রই এই মাদক চক্রের বাকি পান্ডাদের গ্রেফতার করা হবে।