অনুব্রত কাণ্ডে নতুন মোড়, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ নেতাদের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে বীরভূমে পড়ল পোস্টার
যশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই পোস্টার ঘিরে তৈরি হয়েছে তীব্র চাপানউতোর
অনুব্রত (Anubrata Mondal) কান্ডে নতুন মোড়। কিছুদিন আগেই তদন্তকারীরা দাবি করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামীদের নামে প্রচুর সম্পত্তির হদিস মিলেছে বীরভূমে। সেই আবহেই এবার জেলার দুই তৃণমূল নেতা সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে অভিযোগ তুলে পোস্টার পড়লো বীরভূমের জায়গায় জায়গায়। কিছুদিন আগে যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নামে নতুন তৃণমূলের পোস্টার পড়েছিল, এদিনের এই পোস্টার থেকেও সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
রবিবার বীরভূমের দুবরাজপুরের জশপুর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি মুন্সী মোজাম্মেল হক ওরফে কাঞ্চন এবং দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ পরিমল সৌয়ের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে কটাক্ষ করে পোস্টার পড়েছিল এলাকায়। অভিষেকের পাশাপাশি দলের দুবরাজপুর ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্রকে উদ্দেশ্য করে তৈরি করা হয়েছিল এই পোস্টার। অভিযোগ করা হয়েছে, এই দুই তৃণমূল নেতার বিপুল সম্পত্তি বৃদ্ধি হওয়ার কারণে বীরভূমে তৃণমূল কংগ্রেসের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। ঘটনাচক্রে, এই দুই নেতাই কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পর বাম শিবির থেকে ঘাস ফুল শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন। এখনো পর্যন্ত কারা পোস্টার দিল সেটা জানা যায়নি। তবে তৃণমূলের একাংশের দাবি, এই দুই নেতার অস্বাভাবিক উন্নতি তৃণমূলের একাংশ মেনে নিতে পারেনি। তাই তারাই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী হয়ে এই পোস্টার দিয়েছে দুই তৃণমূল নেতার নামে।
এই বিশেষ পোস্টারে দাবি করা হয়, শেখ কাঞ্চনের ৮০ লক্ষ টাকার বিলাসবহুল একটি বাড়ি রয়েছে, ২৭ লক্ষ টাকার আম বাগান রয়েছে, ৪টি পুকুর রয়েছে এবং রয়েছে ১৭ বিঘা জমি। এছাড়াও পরিমলের বাড়িতে রয়েছে নাকি হাঁড়ি ভর্তি সোনা, গোলা ভর্তি টাকা। যদিও, পরিমল এবং কাঞ্চন এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন, এবং অভিযোগ জানাচ্ছেন, তাঁদের পৈত্রিক সম্পত্তিকে 'অস্বাভাবিক সম্পত্তি' বলে দাবি করে তাঁদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এই পোস্টারের মাধ্যমে। যদিও, বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বীরভূমে কিন্তু শাসক দলের নেতা হওয়ার সুবাদে ক্রমশ দাপট বেড়েছে এই দুই নেতার। একসময়ের বাম কর্মী কাঞ্চন গাড়ি চালাতেন। ২০১১ সালে পালাবদলের আগে তৃণমূলে এসেছিলেন।
এই মুহূর্তে তার স্ত্রী জেলা পরিষদের শিশু এবং নারী সুরক্ষা কর্মাধ্যক্ষ। স্থানীয় সূত্রে দাবি, তাঁর পারিবারিক কিছু জমি থাকলেও ২০১৬ সালের পরে সেই জমিতে আমবাগান তৈরি করা হয় এবং বাড়িতে মার্বেল বসে। প্রাক্তন বাম কর্মী পরিমল তৃণমূলে এসে ২০১৩-তে যশপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হয়েছিলেন। পরেরবার পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ হয়েছিলেন পরিমল। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণও নজরে পড়ার মতো। দলের অন্দরে খবর, পরের বছরের পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করার উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই কাজ করতে শুরু করেছে তৃণমূল। কাঞ্চন এবং পরিমলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দল। যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে তীব্র চাপানউতোর।