সামান্য দুধ বিক্রেতা থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার মালিক, তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানকে নিয়ে তদন্তে পুলিশ
চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদলে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন এই নেতা
ছিলেন দুধ বিক্রেতা, এখন তিনি কয়েকশো কোটি টাকার মালিক। হাওড়ার এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের এই ঘটনায় চক্ষু চড়কগাছ রাজনৈতিক মহলের। হাওড়ার (Howrah) জগদীশপুরের তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান তথা বর্তমান বিজেপি নেতা গোবিন্দ হাজরাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশি হেফাজতে তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে প্রাক্তন এই তৃণমূল প্রধানের সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন সামান্য দুধ বিক্রেতা। তারপর ডালের ব্যবসা শুরু করেন। এরপর ২০০৩ সালে তৃণমূলের টিকিটে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে পঞ্চায়েত প্রধান হন অভিযুক্ত গোবিন্দ হাজরা। সেই থেকে টানা ১৮ বছর তিনি পঞ্চায়েত প্রধান থেকেছেন। এরপর শাসকদলের সঙ্গে শুরু হয় মতবিরোধ। সূত্রের খবর, তিনি বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। এরপর চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন।
এই প্রাক্তন তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তিনি নাকি আস্ত একটি হাট মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, শাসক দলের প্রধান থাকাকালীন পঞ্চায়েত থেকে কোন ডকুমেন্ট নিতে হলে দিতে হত মোটা অঙ্কের কাটমানি। সরকারি প্রকল্পে বাড়ি বানাতে, ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করতে, জাতিগত শংসাপত্র বার করতে দিতে হত মোটা অঙ্কের নজরাণা বলে অভিযোগ। জগদীশপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ের পাশে জেলা পরিষদের খাস জমিতে পুকুর ভরাট করে ‘মল্লিকা ব্যাঙ্কোয়েট’ নামে অনুষ্ঠান বাড়ি তৈরির কথাও জেনেছে পুলিশ। তাছাড়া চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলা, দোকান থেকে অনেক টাকার জিনিসপত্র কিনে দাম না মেটানোর অভিযোগ এসেছে। এই অভিযুক্তের নাকি দিঘা মন্দারমণিতে হোটেল রয়েছে, বর্ধমানে আছে পেট্রোল পাম্প। হাওড়া জেলা ও জেলার বাইরে ২০ টির বেশি বাড়ির মালিক এই বিজেপি নেতা। যেন অভিযোগের পাহাড়!
সাধারণ দুধ ব্যবসায়ী থেকে গত কয়েক বছরে এই বিপুল সম্পত্তির মালিক কীভাবে হয়েছেন, তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার হাওড়া আদালতে তোলা হবে। যদিও বিজেপি একাংশের দাবি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি করায় গোবিন্দ হাজরাকে ফাঁসানো হচ্ছে।