এবার কি ফুলবদল করছেন চন্দনা বাউড়ি? কি বললেন শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজেই বাঁকুড়া যাচ্ছেন বিধায়কের সঙ্গে কথা বলতে
আবারো কি বিজেপি শিবিরে ভাঙনের আশঙ্কা? ইতিমধ্যেই মুকুল রায় সহ বহু বিধায়ক এবং বিজেপি নেতা আবারো নিজের পুরনো দল তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে পথে পা বাড়াচ্ছেন শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরী? কিছুদিন আগে থেকে চন্দনার নামে এইরকম বিতর্ক শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগে থেকেই নিজের দ্বিতীয় বিবাহ নিয়ে চর্চার মধ্যে উঠে এসেছিলেন এই বিজেপি বিধায়ক। তারপরে তাকে বারংবার কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হয়। তার সম্পর্ক নিয়ে চারিদিকে ঢি ঢি পড়ে । যদিও পরবর্তীতে তিনি আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে এসেছিলেন বলে খবর। সেই বিতর্ক থামতে না থামতেই আবারো বিতর্কের সম্মুখিন চন্দনা বাউরী।
কিছুদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে শোনা যাচ্ছিল তিনি নাকি দলবদল করে পদ্মফুল ছেড়ে ঘাসফুলে চলে যাচ্ছেন। ঘনিষ্ঠ সূত্রে চন্দনা নিজেও জানিয়েছিলেন, শাসক শিবির এর তরফ থেকে তাঁকে বারংবার তৃণমূলে যোগদান করানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। যদিও চন্দনার এই অভিযোগ যে একেবারে নতুন তা কিন্তু নয়। সূত্রের খবর, বাঁকুড়ার বেশকিছু বিধায়ককে শাসক শিবির এর তরফ থেকে এরকমভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। যদি একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় চন্দনা বাউরি নিজেই জানিয়েছেন, তিনি কোন মতেই ভারতীয় জনতা পার্টি পরিত্যাগ করছেন না। তিনি বিজেপির সঙ্গে এখনো রয়েছেন।
যদিও বাঁকুড়ার বিধায়ক তন্ময় ঘোষ বিজেপি তৃণমূলের হাত ধরার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন বাঁকুড়ার বিধায়কদের তৃণমূলে যোগদান করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে শাসক দলের পক্ষ থেকে। এই কারণেই বাঁকুড়ার হাল-হকিকত দেখার জন্য আগামীকাল শুভেন্দু অধিকারী নিজেই যাচ্ছেন বাঁকুড়া। তার আগেই আবার নতুন করে জল্পনা চন্দনা বাউরীকে নিয়ে, যা নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে বিজেপি।
চন্দনা বাউরী, যিনি একজন নিতান্ত সাদামাটা গৃহবধূ থেকে হয়ে উঠেছিলেন একজন বিধায়ক। তার আচার আচরণের জন্যই তিনি বহু মানুষের মন জয় করতে পেরেছিলেন। মানুষের জন্য কাজ করার জন্যই তিনি বিধায়ক হয়ে উঠেছিলেন। তার পরেও খুব একটা রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িত থাকতেন না চন্দনা বাউড়ি। কিন্তু হঠাৎ করেই ছন্দপতন। কিছুদিন আগেই শোনা যায় তিনি নাকি বিবাহ করেছেন, দ্বিতীয়বার! তাও আবার প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়ে, নিজের গাড়ি চালককে। এই বিষয়টি সামনে আসা মাত্রই তুমুল শোরগোল শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক মহলে।
চন্দনার দ্বিতীয় স্বামী কৃষ্ণ কুন্ডুর স্ত্রী রুম্পা কিন্তু তার বিরুদ্ধে এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও প্রথমদিকে চন্দনা বলছিলেন বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। কিন্তু তার পরেই হঠাৎ একদিন তিনি আত্মসমর্পণ করতে চলে যান আদালতে। যদিও শমীক ভট্টাচার্য এখনও বলছেন চন্দনার বিরুদ্ধে থাকা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং তাকে ফাঁসানোর জন্য এবং শাসক দলে যোগ দেওয়ার জন্য এরকম চাপ দেওয়া হচ্ছে।
এই সময় মাঠে নেমে পড়েন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি নিজেও বলেন বাঁকুড়ার বিধায়কদের চাপ দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য। এছাড়াও তার অভিযোগ, পুলিশ নাকি চন্দনা বাউরী কে সরাসরি তৃণমূলে যোগদান করতে বলেছে। এই পরিস্থিতে শুভেন্দু অধিকারী গলায় রয়েছে, ' বহু বিজেপি কর্মীকে বর্তমানে জেল খাটতে হচ্ছে কারণ তারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কথা বলে বিজেপির পতাকা ধরেছিলেন।' কিন্তু শুধুই কি তাই? এতজন বিধায়কের বেসুরো হওয়ার পিছনে কি শুধুমাত্র রয়েছে শাসক দলের প্রভাব নাকি অন্দরে বিজেপি গোষ্ঠী কোন্দল এবং বিজেপির দুর্বল সাংগঠনিক পরিকাঠামো দায়ী? উত্তর খুঁজতেই এবারে সরাসরি মাঠে নেমে পড়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজেও।