করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করলে শরীরে হতে পারে দুরারোগ্য স্নায়ুর রোগ, চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এলো গবেষণায়
ভারত এবং ব্রিটেনে ইতিমধ্যেই এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া গেছে
শুধুমাত্র করোনা ভাইরাস নয়, তার ভ্যাকসিনটিও আপনার জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে! সম্প্রতি প্রকাশ পাওয়া একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে যারা করোনা ভাইরাসের টিকা গ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে ১১ জনের দেহে একটি বিরল প্রজাতির নিউরোলজিক্যাল সিনড্রোম ধরা পড়েছে। এই সিনড্রোমের নাম হলো গুলেন ব্যারি সিনড্রোম, এবং এই সিনড্রোমে আক্রান্ত হলে শরীরে ভয়ানক পক্ষাঘাত এমনকি মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। জানা যাচ্ছে, এখনো পর্যন্ত যারা ব্রিটিশ সংস্থা এস্ট্রোজেনেকার কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন তাদের মধ্যে ১১ জনের দেহে এই সিনড্রোমটি বাসা বেধেছে। ভারত এবং ইংল্যান্ড দুটি দেশেই এই ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে। এই ১১ জনের মধ্যে ৭ জন কেরালা নিবাসী এবং ৪ জন ব্রিটেনের নটিংহামের বাসিন্দা। এরা সকলেই করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড গ্রহণ করেছিলেন।
কি আদতে এই গুলেন ব্যারি সিনড্রোম?
এটি হলো একটি বিরল প্রজাতির অটোইমিউন ডিসঅর্ডার, যাতে কোন ব্যক্তির দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি তার স্নায়ুগুলোকে আক্রমণ করে বসে। এর ফলে তার শরীরে দুর্বলতা এবং জড়তা লক্ষ্য করা যায়। এই সিনড্রোমটি খুব তাড়াতাড়ি সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে এবং সারা শরীর পঙ্গু করে দেয়। এমনকি এই সিনড্রোমে আক্রান্ত হলে স্নায়ু কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে যার ফলে মানুষের হৃদপিণ্ড কাজ করা বন্ধ করে দেয় এবং সেই মুহূর্তে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। মূলত এক্ষেত্রে ফেসিয়াল নার্ভ প্যারালাইসিস সবথেকে বেশি হয়, অর্থাৎ মুখে একটা অদ্ভুত আড়ষ্ট ভাব লক্ষ্য করা যায় এই সিনড্রোমে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে।
এই সিনড্রোমের লক্ষনগুলি কি কি?
- শুরুতেই পায়ের আঙ্গুল গোড়ালি এবং হাতের আঙুলও কব্জিতে অসাড়তা
- তারপর দুর্বলতা এবং পা দুর্বল হয়ে যাওয়া
- দ্বিত্ব দৃষ্টি অর্থাৎ যেকোনো জিনিস দুটো করে চোখে পড়া
- মুখের পেশিতে ভয়ানক পক্ষঘাত
- হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে যাওয়া
- রক্তচাপের ওঠা নামা শুরু হওয়া
- সারা শরীর ঝিমঝিম ভাব
- ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে অসুবিধা শুরু হওয়া
- অনেকে চোখের মনি পর্যন্ত নড়াতে পারেন না
- একটা সময় এমন আসে যখন মানুষ ও উঠে দাঁড়াতে পর্যন্ত পারেন না, পক্ষাঘাতের সম্পূর্ণ শরীর জর্জরিত। অনেক সময় এই রোগের কারণে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে
একটি স্টাডি থেকে জানা গেছে গত ১০-২২ দিনের মধ্যেই এই ১১ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। তাদের সকলেরই মুখে একটা আড়ষ্টতা লক্ষ্য করা গেছে, এবং ভ্যাকসিন গ্রহণ করার পর থেকেই সারা রাজ্যে এই বিরলতম সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ১০ গুণের বেশি বেড়ে গিয়েছে। কেরলে ইতিমধ্যেই ১.২ মিলিয়ন মানুষ এই কোভিশিল্ড টিকাটি গ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যেই, ৭ জনের দেহে এই সিনড্রোম পাওয়া গিয়েছে। ভ্যাক্সিনেশন এর প্রথম ডোজ এর পর থেকেই তারা আক্রান্ত হয়েছিলেন এই গুলেন ব্যারি সিনড্রোমে। এস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিন গ্রহণ করার পর থেকেই এরকম সমস্যা হচ্ছে বলে সকলেই।