মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে মারা যাচ্ছেন চিকিৎসক–স্বাস্থ্যকর্মী
শোকার্ত পরিজনদের পাশে নেই সরকার
পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একের পর এক মৃত্যু ঘটছে চিকিৎসকদের৷ কর্তব্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে রোগীদের বাঁচাতে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিচ্ছেন তাঁরা৷ কিন্তু দুঃখের হলেও সত্য, তাঁদের এ মহান প্রাণদানের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখাচ্ছে না রাজ্য সরকার৷
গত এপ্রিলে করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকের মৃত্যুর প্রথম ঘটনাটি ঘটে৷ তারপর থেকে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮ জন চিকিৎসক৷ আগস্টে মারা গিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগণার অত্যন্ত জনপ্রিয় চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্য, মাত্র ৫৭ বছর বয়সে৷ মারা গিয়েছেন আর এন টেগোরের চিকিৎসক ৩৬ বছরের নীতীশ কুমার৷ একটি দু’বছরের সন্তান আছে তাঁর৷ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক সুরেন্দ্রনাথ বেরা মারা গিয়েছেন গত ৯ সেপ্ঢেম্বর৷ তাঁর কনিষ্ঠ সন্তানটির বয়স মাত্র দু’মাস৷
এই চিকিৎসকদের অনেকেই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী৷ ফলে নিতান্ত অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন পরিবারের লোকজন৷ এঁদের পাশে দাঁড়ানো দূরের কথা, সরকারের তরফ থেকে এ ধরনের মৃত্যুর প্রতি নীরব উদাসীনতা ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ছে না৷ মৃত চিকিৎসকদের অনেকের পরিবারই এখনও স্বাস্থ্য দপ্তর ঘোষিত ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হাতে পাননি৷ এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে চিকিৎসক সংগঠনগুলি৷
শুধু চিকিৎসকরাই নন, হাসপাতালের কর্মচারী, আশাকর্মী ও পৌর স্বাস্থ্যকর্মী– কাজের সূত্রে যাঁদের সরাসরি করোনা রোগীদের সংস্পর্শে আসতে হচ্ছে, প্রায়শই শোনা যাচ্ছে তাঁদের অনেকের মৃত্যু খবর৷ সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলি বার বার সরকারের কাছে উপযুক্ত সুরক্ষা–ব্যবস্থা ও মৃত কর্মীদের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে৷ যত দ্রুত সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়, ততই মঙ্গল৷