করোনায় হারিয়েছেন ছোট বোনকে, তারই শান্তি কামনায় সুন্দরবনের যশ বিদ্ধস্ত এলাকায় ত্রানকার্যে কর্পোরেট কর্তা
বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ধৃতিমান সেনগুপ্তের টিম হিউম্যান গ্রোভস
বেশ কিছুদিন আগে করোনা ভাইরাস কেড়ে নিয়েছিল একমাত্র বোনের জীবন। তারপর থেকেই কাজ শুরু বিধ্বস্ত মানুষদের পাশে দাড়ানোর। তার কথায়, "সবার মধ্যে আমি আমার বোনকে খুঁজছি। ওকে তো বাঁচাতে পারলাম না। কিন্তু প্রকৃতি বিদ্ধস্ত মানুষের সেবা করতে আমার মৃত বোনের আত্মা শান্তি পাবে " দিন কতক আগে থেকেই একজন কর্পোরেট কর্মী যুবককে দেখা যাচ্ছে মানুষের পাশে দাড়াতে। অনেকই জানতে চান, ইনি কে? আসলে এই যুবকের নাম হলো ধৃতিমান সেনগুপ্ত। তিনি বহুজাতিক সংস্থার একটি উঁচু পদে আছেন। গত মাসেই তার একমাত্র আদরের ছোট বোন মারা যান করোনা ভাইরাসের আক্রমণে। তারপরেই তিনি বিদ্ধস্ত মানুষের পাশে দাড়ানোর মত একটি কাজ শুরু করে দেন।
তিনি নিজে একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেন, 'কোভিড লোকাল টাস্ক ফোর্স'। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করে। সেখানেই যুক্ত হন চিকিৎসক, হাসপাতালের কর্মী, ইঞ্জিনিয়ার, শিল্পী, অভিনেতা অভিনেত্রী থেকে শুরু করে সমস্ত পেশার মানুষ সকলেই ধৃতিমান এর এই লড়াইয়ে সামিল। পালস মাপার অক্সিমিটার, করোনা আক্রান্ত রোগীদের খাবার পৌঁছে দেওয়া, ভর্তি হতে না পারা রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করা, আরো কত কি! এমনকি দক্ষিণ কলকাতায় তিনি নিজের বোনের স্মৃতিতেই শুরু করলেন কমিউনিটি কিচেন।
কিন্তু, তার মাঝেই এসে হাজির যশ ঘূর্ণিঝড়। গ্রামের পর গ্রাম ভেসে গেছে এই ঝড়ের দাপটে। বহু মানুষ নিজের মানুষকে হারিয়ে পথে বসেছেন। সেইসব মানুষকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন ধৃতিমান এবং তার টিম। সুন্দরবনের পাথর প্রতিমার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে তারা বিতরণ করলেন শাড়ি, গামছা, লুঙ্গি থেকে শুরু করে স্যানিটাইজার, স্যানিটারি ন্যাপকিন, ব্লিচিং পাউডার, জিওলিন, মাস্ক, সহ আরো অনেক কিছু। আর এই উদ্যোগের জন্য তাদের নিজেদের তৈরি করা স্লোগান, "যশের পরে, মানুষের তরে, সুন্দর মনে সুন্দরবনে।"