বিচারক এবং আদালত কর্মীদের নাম বিকৃত করে কোটি কোটি টাকার জালিয়াতি, চাঞ্চল্য বাঁকুড়ায়
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ
আদালতের কর্মী সেজে বিপুল টাকা প্রতারণার অভিযোগ এবারে বাঁকুড়ায়। আদালতের কর্মীদের মধ্যে লুকিয়ে ছিল একজন জালিয়াত। গ্রেফতার হয়েছেন বাঁকুড়া আদালতের একজন কর্মী এবং তার একজন বন্ধু। বিপুল টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। পুজোর সময় আদালত কর্মীদের বোনাসের কাগজপত্র তৈরীর সময় একটি বড়সড় গরমিল নজরে পড়ে কর্মীদের। তখন বোঝা যায় বেশ কিছু ভুয়ো অ্যাকাউন্টে দিনের পর দিন ধরে টাকা জমা পড়েছে। এই বিষয়টি গোচরে আসতে না আসতেই বাঁকুড়া সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বাঁকুড়া জেলা আদালতের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ময়ূখ মুখোপাধ্যায়।
অভিযোগ পেয়ে তড়িঘড়ি তদন্তে নামে পুলিশ। জানা যায়, একসময় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অ্যাকাউন্টস ক্লার্কের পদে থাকা প্রীতম ভকত এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। আদালতের একাধিক কর্মীর নামের বানানের বিকৃতি ঘটিয়ে তাদের পৃথক কর্মী হিসেবে দেখিয়ে তাদের নামে বেতন তুলতো প্রীতম। বেশ কয়েক মাস ধরেই এই জালিয়াতি চলে। প্রথম দিকে তেমন কিছু বোঝা যাচ্ছিল না। কিন্তু বিষয়টি ধরা পড়ে যায় যখন বোনাসের কাগজপত্র তৈরি করা হচ্ছে তখন। কর্মীরা লক্ষ্য করেন, বেশ কিছু ভুয়ো অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বহুদিন ধরে এরকম জালিয়াতি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত মোটামুটি ১৩ মাসের বেতন নিয়ে জালিয়াতি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন বিচারকের নামে জালিয়াতি করা হয়েছে। ২ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে এভাবেই। প্রীতম বর্তমানে বাঁকুড়া ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের ব্রেঞ্চ ওয়ান ক্লার্ক হিসেবে কর্মরত। পুলিশ জানতে পারে, ওই টাকা আত্মসাৎ করতে প্রীতমকে সাহায্য করতো তার বন্ধু অভীক মিত্র। বহুদিন ধরে প্রীতম এবং অভীক আদালতের কর্মীদের নামের বানানের বিকৃতি ঘটিয়ে ভুয়ো কর্মী অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছে। তারপরে তাদের মাইনে পাচার করে দেওয়া হতো অভীকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। দু'জনকেই আজকে গ্রেফতার করেছে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। তাদেরকে বাঁকুড়া আদালতে তোলা হয়েছে। তাদের দুজনের ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের পক্ষ থেকে। এই জালিয়াতির সঙ্গে কোন আরো বড় চক্র জড়িত রয়েছে সেই নিয়ে তদন্ত করছে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ।