পরিবহন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করে গরিবের সঙ্গে ৬ লক্ষ টাকার জালিয়াতি, অভিযুক্ত দুই শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ
কাঁথি থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, একজন এখনো পলাতক
পরিবহন দপ্তরে চাকরি পাবেন, এই প্রলোভন দেখিয়ে বহু সাধারণ মানুষকে নিজের জালিয়াতির জালে জড়িয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরা। এবার তার বিরুদ্ধেই জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি মামলা। কাঁথি থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আর সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এবার রাখাল বেরাকে গ্রেফতার করল পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশ। তবে শুধু রাখাল একা নন, দেশপ্রাণ ব্লক এর বাসিন্দা চঞ্চল নন্দীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ রয়েছে। তবে তাকে এখনো পর্যন্ত পাকড়াও করতে পারেনি পুলিশ। রাখালের বিরুদ্ধে এর আগে অভিযোগ ছিল, সে নাকি সাধারণ মানুষকে সেচ দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করে নিজের প্রলোভনের শিকার বানাতো। অশোকনগরের বাসিন্দা সুজিত দে নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা হাতিয়েছে রাখাল, এই অভিযোগে মানিকতলা থানা রাখালকে গ্রেপ্তার করেছিল। তারপরে আবার কাঁথি থানায় অভিযোগ। এবারে সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কাঁথি থানার পুলিশ রাখাল কে নিজের হেফাজতে নিয়েছে।
তবে শুধু এই দুজন নয়, শোনা যাচ্ছে রাখাল নাকি আরো ৬০ জনের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। এ রকমই একটি প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে এবারে কাঁথি থানায়। সেখানে একজন ব্যক্তি রাখাল বেরা এবং তার এক সঙ্গী চঞ্চল নন্দীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ওই ব্যক্তি পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা এবং তার নাম মিজানুর আলী। তিনি অভিযোগ করেন, "শুভেন্দু অধিকারী যখন পরিবহন মন্ত্রী ছিলেন সেই সময় চঞ্চল নন্দি এবং রাখাল বেরা আমাকে প্রতিশ্রুতি দেন যে তারা আমাকে পরিবহন দপ্তরে একটা চাকরি করে দিতে পারবেন। তার জন্য আমি গত বছর মায়ের ও স্ত্রীর গহনা বন্ধক রেখে এবং বাবার ব্যবসা থেকে টাকা নিয়ে প্রায় ছয় লক্ষ টাকা কাঁথি পুরসভার অফিসে চঞ্চল নন্দির হাতে দিয়েছিলাম। তারা জানিয়েছিল, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার আসার পরে বাকি টাকা নেওয়া হবে। পুজোর সময় নিয়োগ হবে।"
তারপরে যখন শুভেন্দু অধিকারী পরিবহন মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন তখন মিজানুর তাদেরকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে, চাকরি কি পাওয়া যাবে? তখন তারা উত্তর দেয় শুভেন্দু অধিকারী এবারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তখন তাকে ভালো চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু যখন শুভেন্দু অধিকারীর দলের এবারের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়, তখন মিজানুর তাদের কাছে গিয়ে টাকা দাবি করে। ২৭ মে মিজানুর কে টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছিল চঞ্চল। কিন্তু তারপরে ওই দিন সে টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করে। তারপরেই পুলিশের দ্বারস্থ হয় মিজানুর। এই মামলায় রাখালকে গ্রেফতার করেছে কাঁথি থানার পুলিশ। তবে চঞ্চল নন্দী এখনো পর্যন্ত পলাতক। অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারীর কাছ থেকে এখনো পর্যন্ত এই ঘটনা নিয়ে কোন রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।