পিংলার ধর্ষণ ও খুনের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক যোগ নেই, বিজেপি মিথ্যা রাজনৈতিক রং চড়াচ্ছে, বিস্ফোরক নির্যাতিতার কাকা
এ ঘটনায় পিংলা থানার পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে
পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা বিধানসভার পিংলা অঞ্চলে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তাদের বয়ানে অসঙ্গতি খুঁজে পেল পুলিশ। পিংলা থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বক্তব্যের মধ্যে অসঙ্গতি রয়েছে তাই তাদের বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পিংলার একটি নির্মীয়মান বাড়িতে ইট গাথনির কাজ করছিল (এক মহিলা সহ) তিন শ্রমিক। এই বাড়ি থেকেই তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার পরে ওই তিন জন শ্রমিককে আটক করে পুলিশ। পরে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রতিবাদে দীর্ঘক্ষণ ডেবরা সবং রাজ্য সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অবশেষে পুলিশ এসে তাদেরকে বোঝানোর পরে অবরোধ ওঠে। গ্রেফতারের পর এক মহিলার ভূমিকা খতিয়ে দেখছে বর্তমানে পুলিশ। এই ঘটনায় ওই মহিলা বাকি দুজনের সহায়তা করলেন কেন সেই নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে প্রয়োজনে তাদেরকে নিয়ে আবার সেই ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনাটি পুনর্নির্মাণ করা হবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "ঘটনার তদন্ত চলছে, অভিযুক্তদের বয়ানে অসংগতি আছে, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।"
কিন্তু শীতলকুচি কাণ্ডে সিআইএসএফ জওয়ানের আহত হবার বিভ্রান্তিকর ছবি প্রকাশ করার পরে আবারো সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি বির্তকের ঝড় তুলেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। নির্বাচনের পরে বেশ কিছু জায়গায় বিজেপি কর্মীদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা ঘটছে। এবং স্বভাবতই সরাসরি দায় চাপানো হচ্ছে তৃণমূলের উপরে। আর এই ধর্ষণকাণ্ডের পরেও বিজেপি নেতা সৌমিত্র খা, এই ঘটনার উপরে রাজনৈতিক রঙ চড়িয়ে এদিকে রাজনৈতিক খুন হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। ওই টুইটে দাবি করা হয়েছিল ওই মেয়েটিকে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে ৬ জন তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডা ধর্ষণ করে তার মৃতদেহ তার বাড়ির সামনে ঝুলিয়ে দেয়। ফ্যাক্ট চেক করে জানতে পারা গেছে, দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর সঙ্গে আদৌ কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো সম্পর্কই নেই। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য ছোট্টু মুন্ডা, বিজয় মুরমু এবং তপতী পাত্র কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা তিনজন ঠিকা শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। এদের ৩ জনের সঙ্গেও কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো সম্পর্ক নেই।
ওই মেয়েটির কাকা জানিয়েছে বিজেপি যেভাবে তাঁর ভাইঝির মৃত্যুকে তাঁদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করছে সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তাঁর কাকার বক্তব্য, ওই মেয়েটিকে নির্যাতন করেছে দুইজন মিস্ত্রি। তার সাথে ছিলেন একজন মহিলা। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়াতে নেটিজেনদের মধ্যে ভুয়া খবর ছড়িয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় জনতা পার্টি এই গণধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডের উপরে মিথ্যা রাজনৈতিক রঙ চড়িয়ে শাসক দলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে। তবে শুধুমাত্র বিজেপি নয়, এই খবর ছড়ানোর জন্য দায়ী বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেলও।