চাঁদে জমি কিংবা দামি নেকলেস নয়, স্ত্রীকে অ্যানিভার্সারি গিফট 'বাপের হোটেল'!
কী এই 'বাপের হোটেল'? চলুন একটু ঘুরে আসা যাক
বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রীকে চাঁদে জমি কিংবা দামি নেকলেস নয়, উপহার দিলেন 'বাপের হোটেল'। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন 'বাপের হোটেল'! এ আবার কী জিনিস? এখানে কী হয়? পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির এক শিক্ষকের কীর্তিতে নেটিজেনদের প্রশংসার বন্যা।
কাঁথির (Kanthi) এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্যামল জানা (Shyamal Jana)। তিনিই নিয়েছেন এমন অভিনব উদ্যোগ। তৈরি করেছেন পশু-পাখিদের জন্য হোটেল। ব্যাপারটি ঠিক কী রকম? প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল মানুষ। পশু-পাখিদের তার থেকেও রেহাই নেই। এবার তাদের জন্য নিজের বাড়ির খোলা ছাদে করেছেন বাপের হোটেল। সেখানে পশু-পাখিদের জন্য যেখানে সেখানে ছড়ানো ছিটানো থাকছে কাঁচাছোলা, গম, ভুট্টাদানা, বাদাম আরও কত কী। সঙ্গে ঝোলানো আছে কলা, আঙুর, শশা। আর অবশ্যই পানীয় জল। তিনি যার নাম দিয়েছেন 'বাপের হোটেল'। যেখানে পশু-পাখিরা অনায়াসে এসে খেয়ে যাচ্ছে সেইসব খাবার।
এমন উদ্যোগের কারণ কী? প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। এমনকী পশু-পাখিদের অবস্থাও তথৈবচ। তাদের একটু খাবার, জল তুলে দিতেই এমন উদ্যোগ। এমন পশু-পাখি প্রেমীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন অসংখ্য মানুষ। কেউ তুলে দিচ্ছেন ছোলা, মুগ কিংবা কেউ একছড়া কলা। সেগুলো সাজানো থাকছে বাড়ির খোলা ছাদে। পাখিরা এসে খেয়ে যাচ্ছে তাদের খাবার। আর হনুমানের দল কলা পেয়েই তো বেজায় খুশি।
শিক্ষক শ্যামল জানা নিজেই জানিয়েছেন, "আমার বিবাহ বার্ষিকীর দিনে প্রথম দিনেই হনুমানের দল কলা, ছোলা, বাদাম,পানীয় জল খেলো। আমাকে উৎসাহিত করেছেন। আগামী দিনে অনেক সেবা কাজ করেই যাবো।" এই শিক্ষক এর আগেও সমাজকল্যাণে অনেক কাজ করেছেন। কখনও দুঃস্থ মানুষদের জামা-কাপড় প্রদান, আবার কখনও বৃক্ষরোপণ। একের পর এক সামাজিক কাজ করে তিনি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, "সারা পৃথিবী আমার নিজের বাগান আমার বুলেট বাইক নেই, টিনের চালা বাড়ি। আমি গরিব হতে পারি কিন্তু আজ আমার আছে ৩৪৮ টি বট ও অশ্বত্থ বৃক্ষ। প্রতিটি বৃক্ষ আমার এক একটি ফ্ল্যাট। এই ফ্ল্যাটে থাকবে আমার আত্মা,পশু পাখি। ওরা গান গাইবে,নাচবে,গাইবে। আমি শুনব। এই বৃক্ষ গুলো নবজাতকদের অক্সিজেন দেবে। আমি আনন্দিত আপ্লুত ও গর্বিত।"