৪ বছরের লড়াইয়ে অবশেষে সাফল্য! বরখাস্ত মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতার শূন্যপদে চাকরি পেলেন ববিতা
মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসাবে যোগদান করলেন ববিতা সরকার
দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের পর অবশেষে সাফল্য পেলেন ববিতা সরকার। বলা যেতে পারে, নৈতিক জয় হয়েছে ববিতার। মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসাবে যোগদান করলেন ববিতা সরকার। শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার শূন্যপদেই চাকরি পেলেন তিনি। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি ববিতা সরকার। অন্যদিকে হাইকোর্টের নির্দেশমতো চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে মন্ত্রীর মেয়েকে।
স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করার পর দীর্ঘ লড়াইয়ের সাক্ষী ববিতা সরকার বলেছেন, "অবশেষে গত ৪ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং লড়াইয়ের পর জয় পেলাম। ছোট থেকেই নিজেকে শিক্ষিকা হিসাবে দেখার ইচ্ছা ছিল। আজকে সেই ইচ্ছাপূরণ হল। সেই দিনটা আমার জীবনে এসেছে। আমি খুব খুশি হয়েছি।" তবে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার সম্বন্ধে কোনোরকম মন্তব্য করেননি ববিতা সরকার।
তবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে হাতজোড় করে ধন্যবাদ জানিয়ে ববিতা বলেছেন, "উনি আমাদের মত বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের কাছে ভগবান সমান। ওনার বিচক্ষণতার জন্য সমস্ত দুর্নীতি আজ দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। উনি আমাদের জন্য যা করেছেন তা জীবনেও ভুলবো না এবং কৃতজ্ঞ থাকব। পাশাপাশি আইনজীবীর প্রতিও আমি সমান কৃতজ্ঞ।"
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর SSC পরীক্ষা দিয়েছিলেন ববিতা সরকার। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত হয় মেধাতালিকা। সেখানেই ওয়েটিং লিস্টে নাম ছিল ববিতার। প্যানেল লিস্টে থাকা প্রার্থীদের চাকরির পর ওয়েটিং লিস্টের প্রার্থীদের ডাকা হয়। ববিতার নাম ছিল ২০ নম্বরে। কিন্তু, দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পর ববিতা জানতে পারেন তাঁর নাম চলে গিয়েছে ২১-এ এবং অঙ্কিতার নাম চলে গিয়েছে ১ এ। তখন ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা ছিলেন পরেশ অধিকারী। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, দল বদলে ২০১৯ সালে যখন তৃণমূলে এলেন, তখন তিনি মেয়ের চাকরি সহ তিনটি শর্ত রেখেছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হয়ে যান পরেশ। আর তারপরেই আরও কঠিন হয়ে পড়ে ববিতার লড়াই। দুই সন্তানের মা ববিতা হাল ছাড়েননি। আর সেই অদম্য জেদী মানসিকতাই তাঁকে আজ প্রাপ্য চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছে।