বছরের অর্ধেক কাবার, হয়নি কোন পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন, ছুটির পর ছুটির ধাক্কায় লাটে শিক্ষা ব্যবস্থা
একদিকে নিয়োগ দুর্নীতি, অপর দিকে ছুটির ঠেলায় শিকেয় পঠন-পাঠন, শিক্ষার বেহাল দশা
প্রায় দেড় মাস গ্রীষ্মাবকাশের পর ফের ১১ দিনের ছুটি। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে চাপানউতোর। শিক্ষক মহল এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের মাথায় হাত কীভাবে পাঠক্রম শেষ হবে! পাঠক্রম শেষ করার পাশাপাশি প্রায় ৬ মাস অতিক্রান্ত এখনও একটিও পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন (Periodic Assessment) নেওয়া সম্ভব হয়নি। এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ বাকি ছ'মাসের মধ্যে কীভাবে সম্ভব তিনটি পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন নেওয়া।
শিক্ষক মহলের একাংশ ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন সরকার থেকে একটি রূপরেখা তৈরি করে দেওয়া হোক। স্কুল নিজের থেকে চাইলেও এই পরিস্থিতি সামাল দিতে অপারগ। ছ'মাস কেটে গেলেও একটিও পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন নেওয়া তো সম্ভব হয়নি, সেই সঙ্গে পাঠক্রমের তথৈবচ অবস্থা। এ হেন পরিস্থিতিতে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার করুণ দিকটিই ক্রমশ দিনের আলোর মতো বেরিয়ে আসছে, বলছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। এইভাবে গরমের অজুহাতে স্কুল বন্ধ রেখে পড়াশোনার যে দফারফা, তা বলছেন অভিভাবক থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ।
এর আগে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের একটি রূপরেখা তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল প্রথম মূল্যায়ন ৭ মে-র মধ্যে, দ্বিতীয় মূল্যায়ন ২০ অগাস্টের মধ্যে এবং তৃতীয় মূল্যায়ন ২৫ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে। খাতায়-কলমে সেই নির্দেশিকা থাকলেও বাস্তব পরিস্থিতি ভয়াবহ। আচমকাই গরমের ছুটি ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন নেওয়া সম্ভব হয়নি। স্কুল খোলার সম্ভাবনা চলতি মাসের শেষের দিকে। তাহলে প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন যদি জুলাইতেও হয়, অগাস্টে কি দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন সম্ভব? যদি সম্ভবও হয়, পাঠক্রম কীভাবে শেষ করা যাবে সেই নিয়েও তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
ইতিমধ্যেই বছরের প্রায় ছ'মাস অতিক্রান্ত। বাকি ছ'মাসের মধ্যে পুজোর মরশুমে লম্বা ছুটি। সর্বসাকুল্যে হাতে থাকছে মাস পাঁচেক। এই অল্প সময়ের মধ্যে পাঠক্রম শেষ করা, পরীক্ষা নেওয়া কার্যত অসম্ভব। একদিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের ধরাশায়ী অবস্থা, অপর দিকে দীর্ঘদিন ছুটি-সহ আনুষঙ্গিক কার্যকলাপে পড়াশোনার কী হাল, সেই নিয়ে সরব হয়েছেন শিক্ষক থেকে অভিভাবক মহল।