ছেলের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে জয় পেলেন মা, বাড়ি ফিরলেন সসম্মানে
কোর্টের নির্দেশে দীর্ঘ চার মাস পরে পুলিশি পাহারা নিয়ে বাড়ি ফিরলেন বছর ৮৬-র বৃদ্ধা শেফালী দত্ত
ছোট ছেলে এবং পুত্রবধূর অত্যাচারে দীর্ঘ চার মাস ধরে বাড়ি ছাড়া থাকার পরে অবশেষে আইনি লড়াই চালিয়ে অবশেষে জয়ী হলেন মা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে বাঁকুড়া শহরের পালিত বাগান এলাকায় আবারো নিজের বাড়িতে ফিরলেন ৮৬ বছরের বৃদ্ধা শেফালী দত্ত, যিনি মাস কয়েক আগে বাড়িছাড়া হয়েছিলেন। কোনোক্রমে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পরে ছোট ছেলের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আইনি লড়াই চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বৃদ্ধা। হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছেন, বাঁকুড়া সদর থানার উপস্থিতিতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিয়ে ওই বৃদ্ধাকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে হবে। ইতিমধ্যেই সেই নির্দেশ পালন করে বাঁকুড়া থানার পুলিশ ওই বৃদ্ধাকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়েছে। নিজের বাড়ীতে দীর্ঘদিন পরে ফিরতে পেরে স্বভাবতই অত্যন্ত খুশি বৃদ্ধা।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ওই বৃদ্ধা বললেন, "অনেক কষ্ট করে দুই ছেলেকে বড় করেছিলাম। তার মধ্যে একজন আমাকে এভাবে বাড়ি থেকে বার করে দেবে ভাবি নি। আদালত সুবিচার করেছে। অবশেষে আমি নিজের বাড়িতে ফিরতে পেরেছি। কিন্তু আমার একটাই ভয়, ফের যেন ছেলে এবং বৌমা আমার উপর অত্যাচার না করে।" অন্যদিকে জানা যাচ্ছে আদালতের নির্দেশে বৃদ্ধার বাড়িতে রবিবার থেকে আগামী তিনদিন পর্যন্ত পুলিশ পাহারা মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি ওই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ রয়েছে। যদি বৃদ্ধার ওপর পরবর্তীতে কোন অত্যাচার হয় তাহলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি।
যদিও বৃদ্ধার ছোট ছেলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ কিন্তু প্রথম না। স্থানীয় সূত্রে খবর, এর আগেও পরিবারের অন্য লোকেদের সঙ্গে অত্যাচার করেছিলেন ওই ছেলে। শোনা যায় কয় বছর আগে বৃদ্ধার ছোট ছেলের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছিল ঐ বৃদ্ধার এক মেয়ে। পরিবারের অন্য লোকেদেরও ওই ছোট ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সম্পূর্ণ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঐ বৃদ্ধার ছোট ছেলে প্রবীর দত্ত এবং তার পুত্রবধু সম্পা দত্ত। তারা বলছেন, তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন এবং মা বাড়িতে থাকলে তাদের কোনো রকম কোনো অসুবিধা নেই। যদিও, হাইকোর্টের কাছে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ রূপে সত্য বলে গৃহীত হয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের তরফ থেকে।