"৫৬ ইঞ্চির বুক ও সুদক্ষ নেতৃত্ব এখন অধরা", নরেন্দ্র মোদিকে কড়া ভাষায় কটাক্ষ যশবন্ত সিনহা-র
যশোবন্ত সিনহা বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট
গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে করোনার (Corona) প্রকোপ কয়েক গুণ বেড়েছে। প্রতিদিন প্রায় রেকর্ডসংখ্যক সংক্রমণ এবং মৃত্যুর জেরে অতিষ্ঠ গোটা দেশবাসী। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় ঢেউ ভারতে এমন প্রভাব কেন ফেলল সেই প্রশ্ন রয়েছে সবারই মনে। এই বিষয়ে অনেকেই দায়ী করেছে প্রধানমন্ত্রীর টিকাকরণ নীতির গাফিলতিতে। ভারতে প্রথম চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি টিকাকরন প্রক্রিয়া (Vaccination Drive) চালু হয়েছিল। সেই সময় ভারত জানিয়েছিল যে তারা সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীল। তাদের বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন কেনার কোন দরকার পড়বে না। এমনকি ভারত বাইরের বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা শুরু করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) নিজেই বলেছিলেন যে ভারত বিদেশি যত পরিমাণ ভ্যাকসিন আমদানি করছে তার তুলনায় অনেক কম ভ্যাকসিন পাচ্ছে ভারতের মানুষ। বিজেপি সরকার গর্বের সাথে এই কথা ঘোষণা করেছিলেন যে ভারত বিশ্ব দরবারে সবচেয়ে উন্নত ফার্মাসি পরিকাঠামো তৈরি করেছে। কিন্তু এপ্রিল মাসের শুরুর দিক থেকে সেই ভারত বিপর্যস্ত হয়েছে ভ্যাকসিনের অভাবে। বর্তমানে একাধিক রাজ্যে ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। তৃতীয় পর্যায়ের টিকাকরণ প্রক্রিয়াতে ১৮ বছরের উর্ধ্বে সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা থাকলেও অনেক রাজ্যে পর্যাপ্ত যোগানের অভাবে এখনও অব্দি ৪৫ ঊর্ধ্বের ভ্যাকসিনেশন চলছে।
প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা অর্থমন্ত্রী এবং সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট যশবন্ত সিনহা (Yashwant Sinha) সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, 'এটা বর্তমানে সবাই জানে যে এই রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা ও ভ্যাকসিন নেওয়া। এটা জানার পরও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শুধুমাত্র ভ্যাকসিন নেওয়ার কাগজে নিজের একটি ছবি ছাপিয়েছেন। এটাই তাঁর অবদান। বাংলায় নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সব জায়গায় ছেয়ে থাকলেও কার্যত লজ্জাজনক হারের পর তাকে আর বাংলার মানুষের জন্য চিন্তা করতে দেখা যায়নি। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এই বিষয়ে চুপ থাকলেও বিদেশি মিডিয়া বারংবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অকর্মণ্য হওয়ার উদাহরণ তুলে ধরেছে। এমনকি দেশের এই দ্বিতীয় ঢেউ শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদির অবদান বলে বলেছেন অনেকেই। শুধুমাত্র ৫৬ ইঞ্চির বুক দেখিয়ে নিজেকে বড় নেতা বললে সবকিছু সমাধান হয়ে যায় না।'
তাঁর আরও বক্তব্য, 'প্রধানমন্ত্রী কি করলেন বা কি ভাবলেন তা নিয়ে হয়তো আমাদের চিন্তা করার কোন দরকার নেই। তবে আমাদের এটা চিন্তার বিষয় যে কি করে এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা যায়। আমরা সবাই আশা করে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করলেও সে নিজেকে অযোগ্য প্রমান করেছেন। এবার হয়তো সময় এসেছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিজেদের রাজ্যকে উদ্ধার করার। প্রত্যেকটি রাজ্য কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়াই এবার থেকে করোনা মোকাবিলায় তাদের খরচ নিজেদের ইচ্ছামত করতে পারে। তাছাড়া এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার হওয়া সম্ভব হবে না।'