উত্তরাখণ্ড হিমবাহ ধস আপডেট: নিহত ৭, নিখোঁজ অন্তত ১৭০, উদ্ধার কার্যে তৎপর ITBP
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।
হিমবাহ ভেঙে ধস নেমেছে উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায়। ধসের জন্য রবিবার সকালে যোশীমঠ এর কাছে ধাউলিগঙ্গার জল স্তর অনেকটা বেড়ে যায় এবং তীব্র জলোচ্ছ্বাসের ফলে একের পর এক গ্রাম ভেসে যেতে থাকে। আট বছর পরে কেদারনাথের একই চিত্র আবারো ভেসে ওঠে উত্তরাখণ্ডের মানুষের চোখে। ইতিমধ্যেই ১৭০ জন মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধারকারী দল ৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখনো পর্যন্ত জলস্তর বেড়েই চলেছে। তবে নিচের দিকে বন্যার সম্ভাবনা এখনই কিন্তু নেই।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত ঘোষণা করেছেন ৭জনের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, এবং ১৭০ জনের মতো এখনো নিখোঁজ আছেন। DRDO এবং প্রতিরক্ষা দলের কর্মীরা উত্তরাখণ্ডের উপরে নজর রাখছেন। আগামীকাল জিও সাইন্টিস্ট এর একটি টিম উত্তরাখণ্ডে পৌঁছাবে সেখানকার পরিস্থিতি উপরে নজর রাখার জন্য। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী আরো ঘোষণা করেছেন, "যারা বিশেষজ্ঞ আছেন তারা এই ধ্বংসের মূল কারণ আরও ভালোভাবে জানাতে পারবেন। তবে আমরা আপাতত মানুষের প্রাণ রক্ষার দিকে নজর রাখছি। ৫ জন সাধারন মানুষ, ১৮০ ধারা এবং ছাগল বন্যায় ভেসে গিয়েছে। আমরা পুরো পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি।"
অন্য দিকে, বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পরিবেশের পরিবর্তনের জন্য উত্তরাখণ্ডে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ITBP এর প্রধান বিবেক পান্ডে জানিয়েছেন, "আমরা বর্তমানে দ্বিতীয় টানেলের উপরে নজর রাখছি। আমরা জানতে পেরেছি এখানে মোটামুটি ৩০ জন মত মানুষ আটকে রয়েছেন। আমরা রাত হলেও আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি এবং মনে করছি আমরা তাদের সকলকে উদ্ধার করে নিতে সক্ষম হব।" অন্যদিকে ফ্রান্স এই পরিস্থিতিতে ভারতের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারবার ফোন করে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে সমগ্র পরিস্থিতির ব্যাপারে জানার চেষ্টা করেছেন।
ITBP এর একটি টিম টানেল থেকে বেশ কয়েক জন শ্রমিককে উদ্ধার করেছেন। সকালে দুটি টিম যোশীমঠ তপবন অঞ্চলে সম্পূর্ণ ঘটনা যাচাই করতে যাবেন। ঋষিকেশ যোশীমঠ মানা রোড হাতি পাহাড় অঞ্চলের বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আবার যান চলাচলের জন্য এই রাস্তা চালু করে দেওয়া হয়। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী এই বন্যায় মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।
কিন্তু আবারও এই বন্যার জল স্তর বাড়তে শুরু করেছে। চামোলি অঞ্চলের সমস্ত মানুষকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে উত্তরাখণ্ড পুলিশের মাধ্যমে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন ওই হিমবাহ এর আশেপাশে কোথাও ওয়াটার পকেটে ছিল। সেই ওয়াটার পকেট বাস্ট হয়ে যাবার কারণে এই দুর্যোগ ঘটেছে। এই ধরনের দুর্যোগ খুব কম দেখতে পাওয়া যায় বলে জানা গিয়েছে।
গুগল আর্থ এবং সমস্ত স্যাটেলাইট ইমেজ এরকম কোন ওয়াটার পকেট খুঁজে পেতে সক্ষম হয়নি। কিন্তু বিজ্ঞানীদের ধারণা এটা মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টি কারণ নয়। আপাতত, ধাউলি গঙ্গা এলাকাতে টানেলের মধ্যে ৩০-৩৫ জন শ্রমিক আটকে পড়েছেন। বর্তমানে তাদের উদ্ধারকাজের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ছে উদ্ধারকারী দল। জেসিবি এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশ মাধ্যমে তপবন বাধের সামনে অঞ্চল পরিষ্কার করে শ্রমিকদের উদ্ধার করার কাজ চলছে ITBP এর মাধ্যমে।