নির্ধারিত সময়ের আগেই আজই শেষ লোকসভার বাদল অধিবেশন
বিরোধীদের আচরণে রাজ্যসভায় কেঁদেই ফেললেন বেঙ্কাইয়া নাইডু
নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হচ্ছে এবারের লোকসভার বাদল অধিবেশন (Monsoon Session)। কথা ছিল ১৩ অগাস্ট শুক্রবার পর্যন্ত চলবে সংসদের বাদল অধিবেশন। কিন্তু আজ বেলা এগারোটায় বাদল অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণ পরেই সমাপ্তির কথা ঘোষণা করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা (Om Birla)। যদিও রাজ্যসভার অধিবেশন কবে শেষ হচ্ছে এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।
সূত্রের খবর, এবারের বাদল অধিবেশনে বিরোধীদের ক্রমাগত বিক্ষোভ, হইহট্টগোলে প্রত্যাশা মতো কাজ হয়নি। তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই এই সিদ্ধান্ত। যদিও বিরোধীরা স্পিকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। স্পিকার আরও জানিয়েছেন, এবারের সংসদের বাদল অধিবেশন বিরোধীদের লাগাতার বিক্ষোভের মুখে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয়নি। পাশাপাশি বিরোধীরা কৃষি আন্দোলন, পেগাসাস ইস্যু, পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগাতার দাম বৃদ্ধি নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন। এরফলে সংসদ ঘণ্টার পর ঘণ্টা অচল থেকেছে। মুলতুবি রাখতে হয়েছে সংসদের উচ্চ ও নিম্ন কক্ষ। এদিন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সরকারের অনড় মনোভাবের কারণে সংসদে পেগাসাস নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি। তাই স্পিকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
অন্যদিকে এদিন রাজ্যসভায় বিরোধীদের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে কেঁদেই ফেলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু। গতকাল মঙ্গলবারে বিরোধীদের আচরণে তিনি সংসদের পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় তিন কৃষি আইনের বিষয়ে রীতিমতো ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে যায়। শুধু তাই নয়, স্লোগান দিতে দিতে সংসদের নিয়মাবলীর বই ছুঁড়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে। এদিন এই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, "গণতন্ত্রের পবিত্র স্থানে মঙ্গলবার যা ঘটেছে, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসাবে তার পরিণাম ভেবে আমি সত্যিই ভীত। সারা রাত ঘুমোতে পারিনি।"
উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই শুরু হয়েছিল সংসদের বাদল অধিবেশন। হওয়ার কথা ছিল ১৩ অগাস্ট পর্যন্ত। এবারের অধিবেশনে এমন কিছু নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে, যা আগে কখনও ঘটেনি বলে অনেকের দাবি। তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন সাংসদকে সাসপেন্ড পর্যন্ত করা হয়েছে। তারপরও সংসদের অচলাবস্থা কাটেনি। অধিকাংশ দিনেই নির্ধারিত সময়ের আগেই সংসদের মুলতুবি ঘোষণা হয়েছে। বিরোধীদের এই আচরণের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। সব মিলিয়ে এবারের বাদল অধিবেশনের নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল গোটা দেশ।