ধর্ষিতার দু’মাসের শিশুসন্তানকে ৯০,০০০ টাকায় বিক্রি করে দিল ধর্ষিতারই আত্মীয়
শিশুটির সন্ধান পেয়েছে পুলিশ
১৬ বছর বয়সী এক ধর্ষিতার দু’মাসের শিশুসন্তানকে দত্তক দেওয়ার নামে ৯০,০০০ টাকায় বেচে দিল ধর্ষিতারই আত্মীয়। ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে। তবে বহু প্রচেষ্টা এবং নাটকীয়তার পর অবশেষে শিশুটির সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।
সূত্রের খবর, দত্তক দেওয়ার নাম করে মঙ্গলবার শিশুটিকে বিক্রি করে ধর্ষিতার আত্মীয়। বুধবার সন্ধ্যাবেলা মহিলা এবং শিশু উন্নয়ন বিভাগ কোটওয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মহিলা অভিযোগ করেছেন, তাঁর নিকটাত্মীয়টি ১০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে তাঁর সাথে গ্রহণকারী পরিবারের দত্তক সংক্রান্ত চুক্তি করেন। যদিও মহিলা পরে জানতে পারেন, তাঁর দু’মাসের শিশুসন্তানটি বিভিন্ন শিশু পাচারকারীদের মাধ্যমে ওই পরিবারের কাছে পৌঁছেছে।
এবিষয়ে জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মুস্তাক পাঠান বলেছেন, যে পদ্ধতিতে শিশুটিকে দত্তক নেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। তিনি জানান, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে কোনও শিশুকে দত্তক নেওয়ার সময় টাকার লেনদেন করা দণ্ডনীয় অপরাধ। ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়ে তিনি জেলা শিশু সুরক্ষা বিভাগের উপদেষ্টা, অরুন শুক্লাকে সতর্ক করেন। এরপরই অরুনবাবু জেলার মহিলা ও শিশু সুরক্ষা আধিকারিককে বিষয়টি জানান এবং শিশুটির মায়ের বয়ান সংগ্রহ করেন।
মহিলা অভিযোগ করেন, ৯০,০০০ টাকার বিনিময়ে তাঁর শিশুকে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছেন তাঁরই নিকটাত্মীয়। এরপরেই দুই পক্ষ মিলে শিশুটিকে উদ্ধারের আর্জি নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ জানিয়েছে, ছাপরু নগর এলাকায় এক দম্পতির হাতে মহিলার শিশুটিকে তুলে দেন মহিলার আত্মীয় এবং তার বিনিময়ে ঝারিপাটকা অঞ্চলে তিনি টাকার নগদ অর্থ সংগ্রহ করেন।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে ওই ধর্ষিতা মহিলাটি জানতে পারেন তিনি গর্ভবতী। গত জুলাই মাসের শেষের দিকে তিনি এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারানো ওই মহিলা তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়িতেই থাকতেন। জানা গিয়েছে, মহিলাটি সন্তানকে নিজের কাছে রেখে দিতে চাইলেও তাঁর পরিবার তাঁকে সন্তানটি দত্তক দিয়ে দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে থাকে।
সূত্রের মাধ্যমে পাওয়া খবর অনুযায়ী, মহিলার আত্মীয়টি তাঁর সন্তানকে অপর একজন মহিলার হাতে তুলে দেন। পুলিশ শিশুটির তল্লাশি চালাচ্ছে জানতে পেরেই ওই মহিলা তাঁর ফোন সুইচ অফ করে দেন। যদিও শেষমেশ শিশুটির সন্ধান পেয়েছেন পুলিশ। কোটওয়ালি থানার পুলিশের এক শীর্ষ অধিকর্তা জানিয়েছেন, শিশুটির সন্ধান যখন পাওয়া গেছে, তখন আইনমাফিক অপরাধীদেরও শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।