করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কাবু রায়পুর, মর্গে নেই জায়গা, ছড়িয়ে রয়েছে মৃতদেহের স্তূপ
প্রতিদিন ৫৫-র বেশি দেহ দাহ হচ্ছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে তৈরি করা হচ্ছে আরও বৈদ্যুতিক চুল্লি!
ফের করোনার ভয়াবহতা চোখ রাঙাচ্ছে। সোমবারের রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫১১ জন। করোনাকালের মধ্যে যা সবচেয়ে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে চোদ্দ জনের। এমন পরিস্থিতিতে টিকাকরণের সংখ্যা লাখের নিচে নেমে যাওয়ায় বাড়ছে উদ্বেগ। আর তার মধ্যেই ফের গতবছরের ইতালির ছবি ধরা পড়ল ভারতে।
সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে সাদা চাদরে অনেকের দেহ ঢাকা। তারা সকলেই মৃত, স্ট্রেচার সমেত দেহগুলি পড়ে রয়েছে মর্গের বাইরে রোদের মধ্যেই। আবার কারোর দেহ ঠাঁই পায়নি স্ট্রেচারে। কিছু দেহ রয়েছে মাটিতেই। খবর, কোভিডের জেরে মৃত্যু হয়েছে এই রোগীদের। কিন্তু মর্গ ভর্তি মৃতদেহের জেরে, তাই মর্গে জায়গা না থাকায় এ ভাবে বাইরের পড়ে রয়েছে দেহ।
এমনই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির ছবি লেন্সবন্দি হয়েছে ছত্তীশগঢ়ের রাজধানী রায়পুরের এক সরকারি হাসপাতালে। এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। বলাবাহুল্য, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যে কতখানি অবনতি হয়েছে তা স্পষ্ট। এ বিষয়ে রায়পুরের প্রধান স্বাস্থ্য অফিসার মীরা বাঘেল সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘কেউ ভাবিনি একবারে এত লোক মারা যাবেন। সাধারণত যা মৃত্যু হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় শীতলীকরণ যন্ত্র রয়েছে। মৃত্যু বেড়ে যখন ১০-২০তে পৌঁছল, আমরা তার ব্যবস্থা করলাম। তার পরই মৃত্যু ৫০-৬০ ছাড়াল। এত কম সময়ে এত দেহ এক সঙ্গে রাখার ব্যবস্থা করা সম্ভব?’’
উল্লেখ্য, ছত্তীশগঢ়ে গত ক’দিন ধরে রোজ আক্রান্ত হচ্ছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। কোভিডের জেরে দৈনিক মৃত্যুর গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। কাজেই, রাজ্য সরকারের তরফে শহর এলাকায় দ্রুত বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে সঠিক ভাবে শবদেহ দাহ করা যায়। এদিকে টান পড়ছে ভ্যাকসিনেও, তবুও ধরা পড়ছে অসচেতনতার ছবি। এদিকে রায়পুরের ভিমরাও অম্বেডকর মেমোরিয়াল হাসপাতালে অতিমারির শুরু থেকেই করোনা রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করা হয়েছে। কাজেই, ঘাটতি রয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থাতেও। তবে শুধু হাসপাতালের বাইরে দেহ পড়ে নেই, শবদাহ নিয়েও সমস্যা দেখা দিচ্ছে ছত্তীশগঢ়ের বিভিন্ন শহরে। খবর, রায়পুর শহরে রোজ দাহ হচ্ছে ৫৫-র বেশি দেহ। যার মধ্যে অধিকাংশ করোনা রোগীর দেহ।