করোনার পরে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার মোকাবিলা কিভাবে হবে? নির্দেশিকা দিল কেন্দ্র
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য এই নির্দেশিকা জারি করেছেন স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সকলের জন্য
করোনাভাইরাস সংক্রমণ-পরবর্তী দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের মোকাবিলায় সারা ভারতের ডাক্তার, নার্স, প্যারামেডিকেল কর্মী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সচেতনতা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বৃহস্পতিবার নয়া নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য আজ এই নতুন নির্দেশিকা জারি করেছেন মূলত স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত সকলের জন্য। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের মোকাবিলা করার জন্য চিকিৎসক এবং সমস্ত ধরনের স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি নির্দিষ্ট গাইডলাইন অবলম্বন করতে হবে। একটি বিশেষ মডিউলও তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রক। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ন্যূনতম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং চিকিৎসার কোনো রকম নেতিবাচক প্রভাব সম্পূর্ণরূপে দূর করতে হলে কোভিডের ব্যাপক চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু তার থেকেও বেশি যেটা প্রয়োজন সেটা হলো করোনা নিয়ে সঠিক সচেতনতা গড়ে তোলা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, 'যদি শরীরে উচ্চমাত্রায় স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয় তাহলে রোগীর দেহে মিউকর মাইকোসিসের মত কিছু রোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। করোনা ভাইরাস পরবর্তী প্রভাবের মধ্যে এই রোগটি অন্যতম। সেখানেই, যদি কম অথবা নগণ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-সহ কোন ওষুধ প্রয়োগ করা যায় তাহলে রোগীর পক্ষে ভালো হবে। তার সাথেই কোভিড পরবর্তী সমস্ত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও কম হবে। যদি আমরা আগে থেকে সতর্ক থাকতে পারি, তাহলে করোনা ভাইরাসের ভবিষ্যতের পরিণতি আমরা খুব সহজে মোকাবিলা করতে পারব।' তিনি আরো যোগ করলেন, ' করোনাভাইরাস পরবর্তী কিছু ধারনা আমাদের সমাজে একেবারে বদ্ধমূল হয়ে রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ভয়। করোনা ভাইরাসের কারণে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যা মোকাবিলা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সমস্যাগুলিকে বোঝা এবং তার সমাধান করা এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।'
এছাড়াও, যাতে একটি সর্বজনীন পদ্ধতিতে এই সমস্ত সমস্যার সমাধান করা যায়, তার জন্য সারা দেশের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে একটি মডিউল তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, মূলত স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষভাবে এই মডিউল তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রক। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ভারতী প্রবীণ পাওয়ার বললেন, করোনাভাইরাস পরবর্তী সমস্যার সমাধান যদি করতে হয়, তাহলে কিন্তু আমাদের সকলের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর কড়া নজর দিতে হবে। করোনাভাইরাস পরবর্তী মানসিক সমস্যাগুলির সমাধান যদি ভালো করে করা হয় তাহলেই একমাত্র সঠিকভাবে করোনা-পরবর্তী সমস্যাগুলির সমাধান হবে। তিনি বলছেন, 'এই মহামারী আমাদের স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটা বিরাট বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এত বড় জনসংখ্যার একটা দেশের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া একটি অত্যন্ত বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের যদি করোনা ভাইরাসের সঙ্গে সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে হয়, তাহলে করোনা ভাইরাসের পাশাপাশি করোনা পরবর্তী সমস্ত উপসর্গের সঠিক চিকিৎসা করতে হবে। সঙ্গেই, সকলের মানসিক ক্ষমতাও আমাদের বৃদ্ধি করতে হবে। সকলকে বোঝাতে হবে, আমরাও করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে পারি। তারপরেই সঠিকভাবে করোনামুক্ত হবে ভারত।'