মানবাধিকার কর্মী আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের ১ টাকার সাজা!

রুদ্ররূপ মুখোপাধ্যায়
প্রকাশিত: 31/08/2020   শেষ আপডেট: 31/08/2020 11:56 p.m.
@pbhushan1

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বিজেপির ঘনিষ্ট বলে কটাক্ষ করে করা টুইট নিয়ে তুঙ্গে তরজা। ১ টাকার জরিমানা দিতে না পারলে ৩ মাসের জেল।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস বোদের বাইক চড়া একটি ছবি প্রকাশ্যে আসে কিছুদিন আগে। সেই ছবি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সহ বিচারব্যবস্থা নিয়ে কটাক্ষ করে টুইট করেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। বলেন, "সারাদেশ যখন নানা বিষয়ে জাস্টিস চাইছে প্রধান বিচারপতি কে ৫০ লাখের বাইক চড়তে দেখা যাচ্ছে। তাও কোনো হেলমেট কিংবা মাস্ক ছাড়া! বাইক টাও আমার বিজেপি সাংসদের।"

twitter.com/pbhushan1/status/1277483749739917318

এই টুইটের পরেই আদালত অবমাননার দায়ে সুপ্রিম কোর্ট থেকেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করা হয় এই আইনজীবীর বিরুদ্ধে। জুনের টুইটের পাশাপাশি ২০০৯ সালে একটি কাগজে প্রশান্ত ভূষণের এই বিচারব্যবস্থা নিয়ে প্রকাশ করা অসন্তোষ নিয়েও মামলা ঋজু হয়। গত ১৪ আগস্ট প্রশান্ত দোষী সাব্যস্ত হলে ওঁকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয় ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার জন্য। ক্ষমা না চেয়ে প্রশান্ত ভূষণ জানান তিনি নিজের মত নিয়ে ক্ষমা চাওয়ার অবস্থায় নেই। ক্ষমা চাইলে ওঁর নিজের করা মতকেই অস্বীকার করতে হয়। আর সেটা নিজের বিবেকের প্রতি অবমাননা। ফলে ক্ষমা চাওয়ার পরিবর্তে যা শাস্তি দেওয়া হবে সেটা মেনে নিয়ে তিনি প্রস্তুত বলে জানান।

এই কেসে প্রশান্তের প্রথম থেকেই বক্তব্য ছিল বাক স্বাধীনতা নিয়ে। আর প্রশান্ত ভূষণ যে শুধুই সুপ্রিম কোর্টের প্রায় ৩০ বছর প্রাক্টিস করা আইনজীবী তেমন নয়। আম আদমি পার্টির শুরুর সময়ের সদস্য প্রশান্ত নিজে একজন মানবাধিকার কর্মী। মানবাধিকার বিষয়ে নানান আন্দোলনে যুক্ত প্রশান্ত বরাবর বলে এনেছেন যে বাক স্বাধীনতার লাইসেন্স নিয়ে তিনি যতটা বলা যায় ততটাই বলেছেন। ফলে কোনও রকমের ভুল স্বীকার করতে তিনি রাজি নন।

আজ এই মামলার রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানালেন, "কারো বাক স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করা যায় না। আবার সম্পূর্ণ বাক স্বাধীনতা বলেও কিছু হয় না। ফলে একটা "টোকেন শাস্তি" স্বরূপ এক টাকা জরিমানার শাস্তি দেওয়া হচ্ছে প্রশান্ত ভূষণকে। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তিনি জরিমানা জমা করতে অপারক হলে তিন মাসের কারাবাস হবে ওঁর। সাথে আগামী তিন বছর তিনি আইনজীবী হিসাবে কোনো মামলায় যুক্ত হতে পারবেন না।

রায় শুনে প্রশান্ত জানান, সকলের সাথে আলোচনা করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন তিনি। যদিও রায় ঘোষণার পরপরই একটি টুইট করে তিনি লেখেন, " আমার আইনজীবী এবং কলিগ রাজীব ধবন এই রায় শোনার পরই আমায় ১ টাকা অনুদান দিয়েছেন। আমি সেটা সাদরে গ্রহণ করেছি।"