শুরু সংসদের শীতকালীন অধিবেশন, বিরোধীদের সম্প্রীতির বার্তা মোদির
যদিও প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য কে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা
অবশেষে খাতায়-কলমে প্রত্যাহার হতে চলেছে ভারত সরকারের দ্বারা স্থাপন করা তিনটি কৃষি আইন। ১৯ নভেম্বর গুরু নানকের জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি লাইভ করে সারা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে জানিয়েছিলেন ভারত সরকারের তরফ থেকে ওই তিনটি কৃষি আইন সম্পূর্ণরূপে তুলে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, তবুও এই কৃষি আইন নিয়ে বিতর্ক থামেনি। কৃষি আইন নিয়ে আলোচনার দাবিতে অধিবেশনের শুরুতেই হট্টগোল শুরু করেছিলেন বিরোধীরা। বেলা বারোটা পর্যন্ত সংসদের দুই কক্ষ সম্পূর্ণরূপে মুলতবি হয়ে যায় বিরোধীদের হই হট্টগোলএ কারণে। অধিবেশন শুরুর আগে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, সরকার যে কোন বিষয়ে বিতর্কে রাজি এবং সরকার বিরোধী পক্ষের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে তৈরি। যদিও বিরোধীপক্ষের তরফ থেকে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন টুইট করে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করেছিলেন।
কিন্তু তারপরেই সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে সংসদে শুরু হয়ে যায় এই কৃষি বিল নিয়ে হই হট্টগোল। অন্যদিকে, শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন সংসদে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার কৃষি আইন প্রত্যাহারের বিল পেশ করবেন বলে খবর। সোমবার লোকসভায় বিল প্রত্যাহারের পর রাজ্যসভায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। প্রথম দিনের অধিবেশনে হাজির থাকার জন্য বিজেপি এবং প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস সাংসদদের প্রতি হুইপ জারি করেছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে এই শীতকালীন অধিবেশনে সংসদে আরো বেশকিছু বিল পাস হতে চলেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মাস কয়েক আগে অর্ডিন্যান্স জারি করে তিনটি কৃষি আইন নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় সরকার, যার পর থেকেই সারা দেশজুড়ে কৃষকদের বিরোধিতা শুরু হয়। শুধুমাত্র পাঞ্জাবের কৃষকরা নয় দেশের অন্যপ্রান্তের কৃষকরাও পাঞ্জাবের কৃষকদের সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। দিল্লির যন্তর মন্তর থেকে শুরু করে দিল্লির বিভিন্ন সীমানায় শুরু হয়ে যায় কৃষি আইনবিরোধী আন্দোলন। পাঞ্জাব থেকে শুরু করে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কৃষকেরা পথে নামেন এই কৃষি আইনের বিরোধিতা করে। দিল্লির সীমানায় আটকে পড়ে সেখানেই তার অবস্থান বিক্ষোভ করতে শুরু করেন। সম্প্রতি তাদের আন্দোলনের কাছে মাথানত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গুরু নানকের জন্ম দিনের দিন অর্থাৎ গুরুপরবের দিন জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন তিনি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। যদিও কৃষকদের বক্তব্য ছিল, নরেন্দ্র মোদী কথায় কিছু হবে না। যতক্ষণ না পর্যন্ত সংসদে এই তিনটি বিল প্রত্যাহার করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা পথে অবস্থান করবেন। সেইমতো তারা নিজেদের কথা রাখছেন এবং এখনো পর্যন্ত তারা নিজেদের আন্দোলন জারি দেখেছেন। তবে শুধুমাত্র কৃষি আইন প্রত্যাহার নয়, অন্যতম সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তাসহ আরো একগুচ্ছ দাবি তুলে ধরেছেন কৃষকরা, যা নিয়ে আবারও সংকটের কেন্দ্রীয় সরকার।