"অক্সিজেনের অভাবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত্যু হয়নি", কেন্দ্রের আজব মন্তব্যে বিতর্ক দেশজুড়ে
মহারাষ্ট্র ও দিল্লির সরকার কেন্দ্রের এমন মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন
করোনা (Corona) সংক্রমনের দ্বিতীয় ঢেউয়ে রীতিমতো নাজেহাল হয়ে পড়েছিল গোটা দেশ। বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও ঠিক একমাস আগে মৃত্যুমিছিল লেগে গিয়েছিল একাধিক রাজ্যে। অক্সিজেনের অভাবে একাধিক রাজ্যে করোনা রোগীর মৃত্যুর ঘটনা বারংবার খবরের শিরোনামে এসেছিল। তবে এই পরিস্থিতিতে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার কেন্দ্রের (Central Government) তরফে ঘোষণা করা হয় যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের অভাবে কোনো মৃত্যুর খবর তাদের কাছে নেই। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এহেন মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই জাতীয় রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। বিরোধীরা একজোটে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একাধিক ইস্যুতে গলায় সুর তুলেছেন। আসলে গতকাল রাজ্যসভায় একটি লিখিত প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, "স্বাস্থ্য রাজ্যের একান্ত বিষয়। নিয়মিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে করোনার দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হিসেব দিতে হবে রাজ্যগুলিকে। রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর কথা এখনও অব্দি কেন্দ্রকে জানায়নি।"
কেন্দ্রের এমন মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন। তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, "ওরা হয়তো এটাও বলতে পারে যে আদেও অতিমারী বলে কিছু হয় না। অক্সিজেনের অভাবে যদি কোন মৃত্যু না হয়ে থাকে তাহলে হাসপাতালগুলি কেন দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। প্রতিদিন তাঁরা বেপরোয়া হয়ে কেন্দ্রের কাছে অক্সিজেনের আর্জি জানিয়েছিল। অক্সিজেনের অভাবের সময় দিল্লিতে একটি অডিট কমিটি তৈরি হয়েছিল যাদের কাছে সমস্ত তথ্য রয়েছে। কিন্তু লেফটেন্যান্ট গভর্নর জানিয়ে দিয়েছিলেন যে সেসব তথ্যের কোন প্রয়োজন নেই। কেন্দ্র নিজেদের প্যানেল গঠন করেছে।"
অন্যদিকে শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত কেন্দ্রের মন্তব্য শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে জানিয়েছেন, "আমি বাকরুদ্ধ। যেসব পরিবারের সদস্যরা অক্সিজেনের অভাবে প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের এমন কথা শুনে কেমন লাগবে? ওইসব পরিবারের উচিত কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করার।" অবশ্য দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং শিবসেনা সাংসদকে একযোগে বিজেপি কটাক্ষ করে বলেছে, "আগে মহারাষ্ট্রে কতজন অক্সিজেনের অভাবে মারা গিয়েছেন তার হিসাব শিবসেনা কেন্দ্র এবং সংবাদমাধ্যমকে জানাক। এই কথা দিল্লির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।"